শাপলায় ঘটে যাওয়া এক আবেগময় অধ্যায়

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

৫ ও ৬ মে ২০১৩। শাপলা চত্বর, শাহবাগ। নবীপ্রেমীদের সরল কিছু দাবী। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এক ঐতিহাসিক আবেগময় অধ্যায়।

৫মে পুরো দিন রাজধানী জুড়ে ছিল নবীপ্রেমীদের ভিড়। ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে -‘তোমরা পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না আমাকে পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি এমনকি নিজের থেকেও বেশি ভালো বাসবে’- রাসূল সাঃ-এর এই বাণীকে বাস্তবায়িত করতে ৫৬ হাজার বর্গমাইল থেকে রাজধানীতে আছঁড়ে পড়েছিল  নবীপ্রেমীদের ঢেউ।

দেড় হাজার বছর আগে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া যোজন যোজন দূরে মদীনার সবুজ গম্বুজের ছায়ায় শুয়ে থাকা রাসূল সাঃ-এর প্রতি গরিব দেশের নবীপ্রেমীদের হৃদয়ের উচ্ছ্বাস দেখেছিল পৃথিবী।

পৃথিবী দেখেছিল সারাদিন কিভাবে রাজধানীতে গুঞ্জরিত হয়েছিল জিকির তাসবীহ। রাজপথগুলোতে সেদিন দেখা মিলেছিল নামাজ পড়ার নয়ানাভিরাম দৃশ্য। অবরোধে যোগ দেয়া প্রায়  সবার মাথায় ছিল ফেস্টুন, হাতে ব্যানার-‘নাস্তিকদের ফাঁসি চাই,আহমদ শফীর বাংলায় নাস্তিকদের ঠাঁই নাই, কুত্তা বিলাই মারিস না নাস্তিক পাইলে ছাড়িস না’ এজাতীয় বিভিন্ন শ্লোগান শোভা পাচ্ছিল তাতে।

আরো পড়ুন: ঈমানী জাগরণ: প্রেরণা এবং কষ্টের অধ্যায়

নবীজী সাঃ-এর চরিত্রে কালিমা লেপনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ হেফাজতে ইসলামের দেওয়া ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়নে রাজধানীতে একত্রিত হয়েছিলেন লাখ লাখ তৌহিদী জনতা। এই নবীপ্রেমীদের সমর্থনে ছিলেন এখানে আসতে না পারা দেশের কোটি কোটি মানুষ। সবার মাঝে ছিল এক বুক আশা,কিছুটা শঙ্কা। দাবী আদায়ে কতটা সফল হবে তৌহিদী জনতা, সব আশা ও শঙ্কার মাঝে এই প্রশ্নটাই আলোচিত ছিল সবার মুখে।ধর্ম প্রাণ জনগণ ভেবেছিলেন মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশে সবসময় কোণঠাসা হয়ে থাকা মুসলমানরা এবার  স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলবে বুঝি, নাস্তিকদের দৌরাত্ন্য কমবে এবার।

আরো পড়ুন:শাপলা চত্বরের ঘটনায় তৌহিদী জনতার পরাজয়ের কিছু নেই: আল্লামা কাসেমী

আরো পড়ুন: বালাকোট থেকে মতিঝিল: মিল-অমিল

সেদিনের পর বাংলাদেশে নাস্তিকদের দৌরাত্ন্য কমেছে ঠিকই। তবে যা ঘটার ছিল ঘটেছে তার থেকে ভিন্ন কিছু। এক ধরণের ভুল বোঝাবোঝি, কেউ কেউ বলেন এক পক্ষের অতি উৎসাহী কথার কারণে ঘটনার মোড় ঘুরেছিল অন্যদিকে। সে যাই হোক এসবের বিশ্লেষণ করবেন যোগ্য ব্যক্তিরা। সবকিছু ছাপিয়ে অনেকেই একে মূল্যায়ন করেন উহুদের সাথে, কেউবা এতে খোঁজেন বালাকোটের অনুপ্রেরণা।

আরো পড়ুন:শাপলা চত্বরে এক বিষণ্ন বিকেল : হয়তো এটিই আমার শেষ মুনাজাত

সময় পেড়িয়ে বর্তমান একদিন ঠাঁই খুঁজে নিবে ইতিাসের কাগজে। ইতিহাসই মূল্যায়ন করবে তৌহিদী জনতার আবেগ উচ্ছ্বাসকে তার পরিচয়ে। আমরা বলবো নবীপ্রেমী সরল মানুষগুলো পরাজিত হয়নি, পৃথিবীকে নবীপ্রেমীদের আপোষহীন ভালোবাসার নজির দেখিয়েছে।

আরো পড়ুন:৬ এপ্রিল: শাপলায় আঁছড়ে পড়া নবী প্রেমের ঢেউ

পূর্ববর্তি সংবাদকরোনার সফল ভ্যাকসিন আবিস্কারের দাবি করেছে ইতালি
পরবর্তি সংবাদরমজান ও করোনার মধ্যেই গাজায় ইসরাইলের হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত