ভুয়া ঋণ দেখিয়ে মায়ের অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকা রেখেছেন প্রশান্ত কুমার হালদার

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: অবৈধ সম্পদ অর্জনে নিজের মায়ের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। ভুয়া ঋণ দেখিয়ে তার মা লীলাবতি হালদারের ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা রেখেছেন তিনি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘পিকে হালদার ভুয়া ঋণ দেখিয়ে অবৈধভাবে অর্জিত প্রায় ২০০ কোটি টাকা তার মা লীলাবতি হালদারের বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে রেখেছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। পরে তার ব্যাংক থেকে ওই অর্থ সুকুমার মৃধা, অবন্তিকা বড়াল, অনিন্দিতা মৃধাসহ পিকে হালদারের কাছে হস্তান্তর এবং স্থানান্তরসহ মানি লন্ডারিং করেন। আইনজীবী সুকুমারের দখলে প্রায় ২০ কোটি টাকা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধার দখলে দেড় কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।’

দুদক সূত্র জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করে বিদেশে পলাতক পিকে হালদারের সম্পত্তি দেখভাল করতেন তার আইনজীবী সুকুমার মৃধা। এই আইনজীবী ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধার মাধ্যমেই পিকে হালদার বিদেশে বসে অর্থপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) পিকে হালদার সংশ্লিষ্টতায় দুদক কার্যালয়ে আইনজীবী সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতার দেখান দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন।

এদিন বিকেলে পিকে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। পিকে হালদারের এই দুই সহযোগীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব।

ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, পিকে হালদারের অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পিকে হালদার বিদেশে পালানোর পর আইনজীবী সুকুমার ও তার মেয়ে অবৈধ সম্পদ দেখভাল করতেন। পিকে হালদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেশকিছু প্রতিষ্ঠান সুকুমার মৃধার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, গ্রেফতার অনিন্দিতা মৃধা উইন্টেল ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির নামে দুই মেয়াদে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ভুয়া ঋণ দেখিয়ে ৬৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা গ্রহণ করলেও তা পরিশোধ করেননি। এছাড়া এফএএস নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ কোটি টাকা ভুয়া ঋণ দেখিয়ে গ্রহণ করলেও তা পরিশোধ করেনি। গ্রেফতাররা বিভিন্ন শেয়ারে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন।

পিকে হালদারের মা লীলাবতীসহ সন্দেহভাজন ২৫ ব্যক্তি যাতে দেশ ছাড়তে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশনকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে সরকার। চিঠিতে ২৫ ব্যক্তির পরিচয় ও ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ইমিগ্রেশনকে সরবরাহ করা হয়েছে।

-আরএম

পূর্ববর্তি সংবাদউপহার হিসেবে টিকা পাঠানোয় মোদিকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পরবর্তি সংবাদঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ