ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্ব বিপর্যয়কর নৈতিক ব্যর্থতার মুখোমুখি: ডব্লিউএইচও প্রধান

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: করোনা ভ্যাকসিন বিতরণ নিয়ে বিশ্ব ‘বিপর্যয়কর নৈতিক ব্যর্থতা’র মুখোমুখি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।

ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘আমিই প্রথম’ দৃষ্টিভঙ্গি আত্মঘাতী হবেও বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের মতে, গরিব দেশগুলোয় করোনার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের আগে ধনী দেশগুলোর কম বয়সী ও স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন পাওয়াটা মোটেও ঠিক নয়।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন: ভ্যাকসিন: কূটনীতি ও সাম্রাজ্যবাদের নতুন গুটি

চীন, ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র বহুজাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উল্লেখিত দেশগুলো ভ্যাকসিন বিতরণের ক্ষেত্রে ‘আগে নিজ জনগোষ্ঠী, পরে অন্য দেশ’ মনোভাব দেখিয়ে আসছে।

গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ৪৯টি ধনী দেশে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ৩৯ মিলিয়নের ডোজেরও বেশি। অন্যদিকে, একটি গরীব দেশ ভ্যাকসিন পেয়েছে মাত্র ২৫ ডোজ।

গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, ‘আমাকে স্পষ্ট করে বলতে হচ্ছে, বিশ্ব এক বিপর্যয়কর নৈতিক ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এই ব্যর্থতার মূল্য বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোকে জীবন ও জীবিকা দিয়ে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেছেন, এই ‘আমিই প্রথম’ দৃষ্টিভঙ্গি আত্মঘাতী হবে। কারণ এটি ভ্যাকসিনের দাম বাড়িয়ে দেবে ও ভ্যাকসিনের মজুতকে উত্সাহিত করবে। শেষ পর্যন্ত এসব কর্মকাণ্ড মহামারিকেই দীর্ঘায়িত করবে।

‘এটা থামাতে এবং মানবিক ও অর্থনৈতিক দুদর্শা ঠেকাতে বিধিনিষেধ দরকার’ বলেও মনে করেন তিনি।

সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে গৃহীত ‘কোভ্যাক্স’ উদ্যোগে সবাইকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন গেব্রেয়াসুস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাস থেকেই ‘কোভ্যাক্স’র কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে।

তিনি বলেছেন, ‘সব সদস্য রাষ্ট্রের কাছে আমার চ্যালেঞ্জ হলো আগামী ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের আগেই যেন করোনার ভ্যাকসিন প্রতিটি দেশে পৌঁছে যায়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের মূল— মহামারি ও অসমতা এই দুটিকে কাটিয়ে ওঠতে এটি একটি প্রত্যাশার প্রতীক হবে।’

প্রতিবেদন মতে, এখন পর্যন্ত ১৮০টিরও বেশি দেশ ‘কোভ্যাক্স’ প্রকল্পে সই করেছে।

গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীন তাদের কোভিড প্রতিক্রিয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছে। সংস্থাটির একটি স্বতন্ত্র প্যানেল জানিয়েছে, জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটির উচিত ছিল আরও আগে আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা। দ্রুত জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ওই প্যানেল চীনেরও সমালোচনা করেছে।

-এসএন

পূর্ববর্তি সংবাদবিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী: ‘তারা শীত নিদ্রায় রয়েছেন’
পরবর্তি সংবাদবেলজিয়াম: দীর্ঘ আন্দোলনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অনুমোদন