কয়লাখনির ২৪৪ কোটি টাকা লোপাটের মামলা: ৬ এমডিসহ ২২ জন কারাগারে

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বহুল আলোচিত দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে ২৪৪ কোটি টাকার কয়লা লোপাটের মামলায় খনির সাবেক ছয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২২ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আলোচিত এ মামলার চার্জ গঠনের দিন বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ওই কর্মকর্তারা দিনাজপুর স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মাহমুদুল করিম জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা চুরি হয়। এ পরিমাণ কয়লার আনুমানিক দাম ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হলে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়।

২০১৮ সালের ২৪ জুলাই কয়লা লোপাটের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান বাদী হয়ে ১৯ জনের নামোল্লেখ করে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দুদকের তফশিলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক সামসুল আলম মামলাটির তদন্ত করে ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই সাবেক সাত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটির চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশিটভূক্ত ২৩ আসামির মধ্যে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুবুর রহমান গেছেন।

চার্জশিটে বলা হয়, ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত (মেয়াদে) আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭.৯৯ টন কয়লা আত্মসাতে জড়িত। আসামিরা দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এজাহারভুক্তরা ছাড়াও চার্জশিটে ৯ জনকে যুক্ত এবং সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ৫ জনকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়।

আসামিরা হলেন- বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও সাবেক এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম, প্রশাসন) শরিফুল আলম, আবুল কাসেম প্রধানীয়া, আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী (মাইন অপারেশন বিভাগ), আরিফুর রহমান মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা বিভাগের ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদার, নিরাপত্তা বিভাগের ব্যবস্থাপক সৈয়দ ইমাম হাসান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোর্শেদুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হাবিবুর রহমান, মাইন ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাহেদুর রহমান, ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ ও মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক শোয়েবুর রহমান, স্টোর ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) একেএম খালেদুল ইসলাম, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হালদার ও মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জোবায়ের আলী।

-এসএন

পূর্ববর্তি সংবাদকুয়েতে মন্ত্রীসভার একযোগে পদত্যাগ
পরবর্তি সংবাদনিষিদ্ধ বিট কয়েনে কোটিপতি রায়হান গ্রেফতার