এখন থেকেই শিশুদের যা শেখাতে হবে

এনাম হাসান জুনাইদ ।।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। আর দুনিয়া আখেরাতের ভবিষ্যত নিরাপদ করার জন্যে দ্বীনী শিক্ষার বিকল্প নেই। সুতরাং আমাদের ভবিষ্যত নিরাপদ করতে হলে আমাদের শিশুদেরকে সবার আগে দ্বীন শেখাতে হবে। আল্লাহ তাআলার সাথে শরীক না করার শিক্ষা- প্রত্যেক বাবা যেন তার সন্তানকে দেন সে কথা আল্লাহ কুরআন মাজিদে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

আল্লাহর সাথে শিরক না করা, নামাজ পড়া, সর্বদা সত্যের উপর অবিচল থাকা এবং দুনিয়ায় চলার জন্যে আরো যে সব আদাব ও শিষ্টাচার প্রয়োজন তা শেখানো বাবার উপর সন্তানের হক। বিশেষত বর্তমান যুগে যখন নৈতিক অবক্ষয় ও ধর্মবিদ্বেষী শিক্ষার ছড়াছড়ি তখন তো নিজের সন্তানদের এসকল হক মা বাবার উপর আরো বেশী করে বর্তায়। তবে দ্বীন শেখানোর পাশাপাশি আলেমগণ এখন বর্তমান যুগের বিভিন্ন ফেতনা সম্পর্কেও শিশুদের সচেতন করার কথা বলছেন।

সর্ব প্রথম আমরা শিশুদেরকে কালেমা শেখাই। আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই। মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল একথা শেখাই। একথার ভেতরে যদিও খতমে নবুয়তের কথা নিহিত আছে  কিন্তু বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষার অনুপস্থিতিতে শিশুদেরকে কালেমার সাথেসাথে খতমে নবুয়তের কথা শেখানোর কথা বলছেন আলেমগণ।

অনেক শিক্ষিত যুবককে দেখা যায় কাদিয়ানী সম্পর্কে জানেন না। খতমে নুবয়ত কি জিনিস বুঝে না। তারা কাদিয়ানীদেরকে অন্য মুসলমানদের মতিই মনে করে। অথচ কাদিয়ানীরা নিঃসন্দেহে কাফের। এবং অন্যান্য অমুসলিমদের চেয়েও জঘন্য অমুসলিম। কারণ, অন্যান্য নিজেদের পরিচয় লুকায় না। তাই তাদের মাধ্যমে ধোঁকা খাওয়ার আশংকা কম। কিন্তু কাদিয়ানীরা যেহেতু নিজেদের পরিচয় লুকায় তাই তাদের মাধ্যমে ধোঁকা খায় বেশী।

তাই শিশুদেরকে কালেমার সাথেসাথে শেখাতে হবে, মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর আর কোনো নবী আসবেন না। কেউ যদি নবী হওয়ার দাবি করে, বা ওহী লাভ করার দাবি করে তাহলে সে ভণ্ড মিথ্যুক।

সে সাথ শিশুদেরকে  খৃস্টানদের সম্পর্কে সচেতন করার পরামর্শ দিচ্ছেন আলেমগণ । আজকাল বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে কতিপয় মিশনারী নিজেদেরকে মাসীহী মুসলমান পরিচয় দিয়ে মানুষকে খৃস্টান বানাচ্ছে। বাচ্চাদেরকে শেখাতে হবে, ইসলামই একমাত্র ধর্ম যার মাধ্যমে আখেরাতে নাজাত লাভ করা যাবে। ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্মে পরকালীন মুক্তি নেই। তথা কথিত আহমদিয়া মুসলিম কিংবা মাসীহী মুসলিম কেউ মুসলমানই নয়।

শিশুদেরকে বর্তমানে মূর্তি ও ‍আগুন পূজা সম্পর্কেও সচেতন করতে বলছেন আলেমগণ। বর্তমানে ভারতীয় পৌত্তলিক সংস্কৃতির সয়লাবে বাংলাদেশেও মূর্তিপূজা, মোম বাতি প্রজ্জ্বালন, আগুন পূজার সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে। এমনও শোনা গেছে যে বাচ্চারা খেলার ছলে এখন হিন্দুদের মত আগুনের পূজা করছে।

এই পূজা ও মূর্তির সাথে মুসলিম শিশুদের মাখামাখির অনেক বড় একটি কারণ হিসাবে মনে করা হয়,  ছোট বেলায় তাদেরকে ঈমান পরিপন্থি কী কী জিনিস সেটা শিক্ষা না দেওয়া। তাছাড়া ছবি, খেলনার এমন পুতুল যা অবিকল নাক মুখ বিশিষ্ট মানুষ, ভাস্কর্য প্রীতি ও তার প্রতি শ্রদ্ধা ইত্যাদির প্রভাবেও শিশু কিশোর তরুণদের মনে ভাস্কর্য এর প্রতি দূর্বলতা ও আসক্তির অনেক বড় কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন আলেমদের কেউ। তারা  একটি মুসলিম সমাজের জন্য অন্য ধর্মের সংস্কৃতির প্রতি এই দূর্বলতা  ধীরে ধীরে পৌত্তলিকতার দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন।

ইজে

পূর্ববর্তি সংবাদহোটেলের খাবার খেয়ে কুমিল্লায় উপ-নির্বাচনে দায়িত্বরত ১৫০ পুলিশ সদস্য হাসপাতালে
পরবর্তি সংবাদইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় দু’টি তেলক্ষেত্রে বোমা হামলা