তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলা, প্রশান্ত কুমার হালদারকে ধরতে পরোয়ানা

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় বিদেশে পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এ পরোয়ানা জারি করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবারই দুদকের পদক্ষেপের হালনাগাদ প্রতিবেদন দাখিলের সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আড়াই মাসেও পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের জন্য পরোয়ানা জারি না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন। এ সময় উষ্মা প্রকাশ করে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, খুবই আনফরচুনেট! আড়াই মাস হয়ে গেল ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্টের একটা অর্ডার হল না। তখন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, আমি যোগাযোগ করেছি, জানিয়েছি। তখন বিচারক তাকে বলেন, আপনি বলবেন, এটা নিয়ে উচ্চ আদালত কনসার্ন্ড।

এর আগে বেঞ্চে দাখিল করা প্রতিবেদনে পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে জন্য ইন্টারপোলের সহায়তা নিতে আদালতের কাছে পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

দুদকের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, পিকে হালদারকে দেশে ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুরোধ করা হলে ইন্টারপোল কিছু তথ্য চেয়েছে, যার মধ্যে আদালতের পরোয়ানা অন্যতম। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পরোয়ানা জারি হলে পিকে হালদারকে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইন্টারপোলকে ফের অনুরোধ করা হবে।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বা গ্রেপ্তার করতে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে- তা জানতে চান হাইকোর্ট।

আদেশে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ঢাকা জেলা প্রশাসককে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পরবর্তী আদেশের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন রেখেছিলেন আদালত।

প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মামলা তদন্তে রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আর্থিক খাত থেকে আত্মীয়স্বজন চক্রের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেয়ার কারিগর পিকে হালদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। দুদক ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে।

এছাড়া দুদকের ক্যাসিনো দুর্নীতির মামলায় চার্জশিট তালিকায় লিজিং কোম্পানি ও আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারে জড়িত পিকে হালদারের নামও রয়েছে। ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতায় তার বিরুদ্ধে গত ৮ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা লোপাট করে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান বলে চলতি বছরের শুরুতে খবর আসে। এরপর আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে তাকে অপসারণের পাশাপাশি তার সম্পত্তি জব্দ করা হয়।

এসএন

পূর্ববর্তি সংবাদড. আবদুল মোমেনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন চীন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তি সংবাদবাংলাদেশে আসবেন বলে জানিয়েছেন এরদোগান: তুর্কী রাষ্ট্রদূত