মসজিদে কোরআন অবমাননার অভিযোগ: লালমনিরহাটে ক্ষুব্ধ জনতার প্রহারে নিহত ১

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম এলাকায় কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে এক জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনগণ।

এ ঘটনায় আরো দুই জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত একজন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন।

বৃহস্পতিবার রাত দশটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছিল। পরে বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদে প্রবেশের পরে কোরআন অবমাননার অভিযোগ এনে স্থানীয়রা ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করে বলে জানা যায়।

জানা যায়, উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি প্রবেশ করে আসরের নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লী ও ইমামকে গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে মসজিদের ভেতরে থাকা অস্ত্র বের করতে বলেন। একপর্যায়ে তারা নিজেরাই মসজিদে অস্ত্র খুঁজতে থাকেন। এ সময় র‍্যাকে রক্ষিত কোরআন শরীফ নিচে পড়লে তারা কোরআন শরীফের উপর পা রেখেই অস্ত্র খুঁজতে থাকেন। এ দৃশ্য দেখে মসজিদে থাকা মুসল্লী উত্তেজিত হয়। পরে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কয়েক জন মুসল্লী উত্তেজিত মুসল্লীদের হাত থেকে ব্যক্তিদ্বয়কে উদ্ধার করে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে নিয়ে যান।

এদিকে কোরআন শরীফে পা রাখার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত মুসল্লীরা বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন। এ সময় বিজিবি ও পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত মুসল্লীকে শান্ত করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মুসল্লীদের আরোও একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল এসে ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙ্গে দুই ব্যক্তির মধ্যে এক ব্যক্তিকে পেয়ে উত্তেজিত মুসল্লিরা গণপিটুনী দিয়ে হত্যা করেন। অতঃপর লাশ টেনে-হেঁচড়ে পরিষদের বাহিরে এনে পেট্রোল ও লাকড়ী দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আরও অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে অপর ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

লালমনিরহাটের এসপি আবিদা সুলতানা বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে পুড়িয়ে মারা যুবকের নাম শহিদুন নবী জুয়েল। তিনি রংপুর ক্যান্টমেন্ট পাবলিক কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন। আর তার সাথে যে ব্যক্তি ছিলেন তার নাম সুলতান জুবায়ের আহমেদ। তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর মোবাইল ফোনে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

পিটিয়ে হত্যা এবং একটি মৃতদেহ আগুন দিয়ে পোড়ানোর ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

পূর্ববর্তি সংবাদসোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম, পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তি সংবাদ‘কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা রাশিয়ার দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়’