আমরা মুসলমান, তাই পারছি না ম্যাক্রনের দিগম্বর-বিকৃত ছবি আঁকতে

আবুল কাসেম ।। 

মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদেরও আছে। কিন্তু আমরা মানুষ। সৃষ্টির সেরা জীব। তাই আমরা পারছিনা ম্যাক্রনের দিগম্বর, বিকৃত ছবি আঁকতে। তার গলায় ফাঁশি দেওয়ার ছবি আঁকতে। সেই ছবিটা হাতে নিয়ে ক্লাসে উপস্থিত হয়ে ছাত্র ছাত্রীদের প্রদর্শন করে বলতে পারছিনা, “দ্যাখো দ্যাখো এটা হলো বিকৃত মস্তিষ্কের, পাগল ও উন্মাদ ইমানুয়েল ম্যাক্রনের ছবি। সে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বটে ! তার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে। কিন্তু কেউ তার মানসিক চিকিৎসার ভার নিতে আগ্রহী নয়। কারণ সে বদ্ধ উন্মাদ। তাকে পাগলা গারদে পাঠানো অপরিহার্য। কারণ সে বাইরে থাকলে, তার পাগলামোতে যে দাবানল জ্বলে উঠেছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত তাতে মনে হচ্ছে, সবকিছু জ্বলে পুড়ে চারখার হয়ে ভস্ম না হওয়া পর্যন্ত সে থামবেনা। চতুর্দিকে তার পাগলামোর জন্য সিডর আইলার চেয়েও ভয়ানক তীব্র গতিতে ঝড় বইছে। তার সীমা ছাড়া উন্মাদনায় বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং সে হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। মুসলিম দেশ তো বটেই অমুসলিম দেশেরও বহু রাজা বাদশা তার নিন্দায় মুখরিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজপথ কাঁপিয়ে দিচ্ছেন প্রতিবাদী জনতা। দাহ করছেন তার কুশপুত্তলিকা।

তবুও কিন্তু তার বেপরোয়া পাগলামো কিছুতেই থামছেনা। সুতরাং এখন সর্বশেষ সিদ্ধান্ত যদি এমন নেওয়া যায়, তাকে শূলে ছড়িয়ে দেখা যেতে পারে তার পাগলামো থামানো যায় কিনা। সে এমনই এক বেহায়া, যাকে বলা যায় বিশ্ব বেহায়া। লাজ লজ্জার মাথামুণ্ডু চিবিয়ে কচলিয়ে এক গ্রাসে অবলীলায় সে গলধকরণ করে ফেলেছে। তাই এখন শত সহস্র নিন্দাবাদের মধ্যেও সে নিজেকে নন্দিত ভাবছে । ভাবছে সে একজন বীরপুরুষ। আসলে সে একটা কাপুরুষোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাজ্ঞানী, মহামানব, বিশ্ব মানবতার বন্ধু ও মুক্তির দূত, সৃষ্টিকুলের প্রতি একান্ত দরদী রহমাতুল্লিল আলামীন মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাঙ্গ চিত্র প্রদর্শনের নিন্দনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। যে মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পায়ের কেটে ফেলে দেয়া নখের সমান যোগ্যতাও হবেনা লক্ষ কোটি ম্যাক্রনের। এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজের নিন্দা জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছে বিবেকবান বিশ্ববাসী। তাই আমরা নির্বাক, নিস্তব্ধ, হতাশ, হতভম্ব এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছি। এরপরও বুকের ভেতর ছাই ছাপা পড়া আগুন জ্বলে ওঠছে বিশ্বের আনাচকানাচে। দিক থেকে দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল। এই ইমানুয়েল ম্যাক্রন একটা অসভ্য, বর্বর, ইতর প্রাণীবিশেষ। রিমান্ডে নিয়ে তার বিশেষ ধরনের পাগলামোর কোনো কুলকিনারা করা যায় কিনা ভেবে দেখা যেতে পারে। অথবা কচুরিপানাভর্তি পুকুরে শীতের কাঁপুনি ওঠা ভোরবেলায় এক হাজার বার ডুব খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা যেতে পারা যায় কিনা ভেবে দেখা যেতে পারে।”

এভাবে তার পরিচিতি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নিকট আমরা তুলে ধরতে পারছিনা। কারণ আমরা মানুষ। আমরা মুসলমান। মানব জাতির কল্যানের জন্যই আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই আমরা কাউকে অপমান ও অপদস্ত করতে পারি না। সে শিক্ষা আমাদের ধর্মে নেই। আমাদের ধর্ম উদার ও মহৎ। মানুষকে গালি দেয়া আমাদের কাজ নয়। বরঞ্চ ভালো কাজের আদেশ দেয়া আমাদের কর্তব্য।

আমাদের ধর্ম গ্রন্থের শিক্ষা হলো, “তোমরাই হচ্ছো দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ জাতি। সমগ্র মানব জাতির কল্যানের জন্যই তোমাদের উপস্থিত করা হয়েছে। তোমরা দুনিয়ার মানুষদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে। আর তোমরা নিজেরাও আল্লাহর উপর পুরোপুরি ঈমান আনবে। আহলে কিতাবরা যদি সত্য সত্যিই ঈমান আনতো তাহলে সেটা তাদের জন্য কতোইনা ভালো হতো। তাদের মধ্যে কিছু কিছু ঈমানদার ব্যক্তিও রয়েছে। তবে তাদের অধিকাংশই হচ্ছে সত্য ত্যাগী লোক।” সূরা আলে ইমরান। আয়াত -১১০। সুতরাং ইমানুয়েল ম্যাক্রনের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান , আপনি সত্যের পথে আসুন, ন্যায়ের পথে আসুন এবং কল্যানের পথে আসুন। আর অসত্য, অন্যায় ও পাপের কাজ থেকে বিরত থাকুন।

পূর্ববর্তি সংবাদসাত মাস পর বাংলাদেশ-ভারত বিমান চলাচল শুরু, যাত্রীদের জন্য বিশেষ নিয়মকানুন
পরবর্তি সংবাদসরাসরি কৃষক থেকে কেজিতে ২৬ টাকায় ধান ও ৩৭ টাকায় চাল কিনবে সরকার