শত শত কোটি টাকা লোপাটকারী প্রশান্ত কুমার হালদার শীঘ্রই দেশে ফিরছেন না

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) অর্থপাচারের মামলার মুখে নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের হেফাজতে দেশে ফেরার ইচ্ছা পোষণ করলেও এখন তিনি আসবেন না। কয়েক শ’ কোটি টাকা আত্মসাত করে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান।

শনিবার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আইনজীবী দুর্নীতি দমন কমিশন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে জানিয়েছেন পি কে হালদার ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরছেন না।

অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, আইএলএফএসএলের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন জানিয়েছেন যে, পিকে হালদার আসবেন না। দুদক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে একটা মেইল করেছেন আইনজীবী মিলন। ই-মেইলে তিনি জানিয়েছেন, পিকে হালদার না কি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, মাহফুজুর রহমার মিলন মেইল করে দুদককে জানিয়েছেন, পিকে হালদার আসছেন না। শারীরিক অসুস্থতা এবং কোভিড-১৯ -এর কারণে তিনি আসছেন না। কখন আসবেন পরে জানাবেন।

তবে এ বিষয়ে পিকে হালদারের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর বিদেশে পাড়ি জমানো পিকে হালদার ২৫ অক্টোবর দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ফিরে আসার জন্য টিকিট কেটেছিলেন। ওই দিন বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটির হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল।

এদিকে তিনি দেশে ফেরা মাত্র তাকে গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) সিংহভাগ ঋণের সুবিধাভোগী প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার। আত্মসাতের অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা করতে নিরাপদে তার দেশে ফেরার নিশ্চয়তা চেয়ে হাইকোর্টে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার হাইকোর্টের একই বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য বুধবার নির্ধারণ করেন। আদালতে বুধবার আইএলএফএসএলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো: খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবীরা জানান, প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার দেশে ফিরে আসতে পারবেন। তবে তিনি দেশে ফেরার পর বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই এক হাজার পাঁচ শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। এছাড়া সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার পাঁচ শ’ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

এ সময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান পি কে হালদার। এরপর দীর্ঘ দিন সেখানে অবস্থান শেষে তিনি দেশে ফিরতে চান এবং এজন্য তার নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং একটি আবেদন জানায়।

আবেদনে বলা হয়, পিকে হালদার দেশে ফিরতে চান। এজন্য তিনি নিরাপত্তা চান। বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করতেই তার এ উদ্যোগ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পিকে হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সাথে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন আদালত।

পরে ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়ায় হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল থাকে। এসব আদেশের অনেক আগে থেকেই পিকে হালদার গোপনে দেশত্যাগ করে কানাডায় পাড়ি জমান।

পূর্ববর্তি সংবাদম্যাক্রকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিলেন এরদোগান
পরবর্তি সংবাদকারওয়ান বাজারে বিডিবিএল ভবনে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে