নভেম্বরের মধ্যে পাট শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধ: পাটমন্ত্রী

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে বিজেএমসি’র আওতাধীন শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধ করা হবে।

আজ বুধবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে বিজেএমসি’র বন্ধ ঘোষিত মিলসমূহের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন ‘বিজেএমসি’র বন্ধ ঘোষিত মিলসসমূহের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে এ পর্যন্ত ৮টি মিলের শ্রমিকদের পাওনা বাবদ মোট ১,৭৯০.৫২ কোটি টাকা অর্থ বিভাগ থেকে পাওয়া গিয়েছে, যা শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে পরিশোধ করা হচ্ছে। আগামী ২৫ অক্টোবরে আরও দুটি মিলের (চট্টগ্রামের হাফিজ জুট মিল ও খুলনার ইস্টার্ন জুট মিল) শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কার্যক্রম শুরু হবে। আশা করা যাচ্ছে যে, এ প্রক্রিয়ায় আগামী মাসের মধ্যে সকল মিলের শ্রমিকদের পাওনা সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা সম্ভব হবে।’

পাটমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবী জুড়ে পাটের কদর ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটচাষিরা ও কাঁচাপাটের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। চলতি পাট মৌসুমে কাঁচাপাটের গড় দর ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০% বেশি। এর ফলে পাটচাষিরা ভবিষ্যতে অধিক পরিমাণে পাটচাষে আগ্রহী হবে। এতে করে দেশের অর্থনীতিতে পাটখাতের অবদান আরো সুসংহত হবে বলে আশা করা যায়।’

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘পাটখাতকে উজ্জীবিত করতে ও মিলগুলো আধুনিক করতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক দুটো কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যায়, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বন্ধ থাকা মিলগুলো পুনরায় চালু হবে। এ ক্ষেত্রে আগের মিলগুলোর অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

উল্লেখ্য যে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে রফতানি আয়ে গত অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি (৮.১০%) অর্জিত হয়েছে এবং এ খাত ৮৮২.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে উঠে এসেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির হার ৩৯ দশমিক ২৬%। আশা করা যাচ্ছে যে, এ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য হতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

সরকারি সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহে বিরাজমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান এবং পাটখাত পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি মিলে কর্মরত সকল স্থায়ী শ্রমিকের গ্র্যাচ্যুইটি, পিএফ ও ‍ছুটি নগদায়নসহ গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধার মাধ্যমে চাকরি অবসানপূর্বক উৎপাদন কার্যক্রম এ বছরের ১ জুলাই থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

শ্রমিকদের আর্থিক দুরবস্থা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উক্ত ২৫টি মিলের ২৪ হাজার ৬০৯ জন স্থায়ী কর্মরত শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বাবদ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৩ সনের পরে হতে অবসরপ্রাপ্ত ১০ হাজার ১০৭ জন শ্রমিকের সাকল্য পাওনা বাবদ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা চলতি অর্থবছরে এককালীন পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন।

শ্রমিকদের ভবিষ্যত আর্থিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকের পাওনার ৫০% নগদে এবং অবশিষ্ট ৫০% তিনমাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করার নির্দেশনা দেন।

পূর্ববর্তি সংবাদরোহিঙ্গা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়
পরবর্তি সংবাদমুরাদনগরের বন্ধ করে দেওয়া সেই মাদরাসাটি খুলে দেওয়া হলো