ফেনীতে বামপন্থীদের লংমার্চে হামলা, অভিযোগের তীর পুলিশ ও এমপি সমর্থকদের দিকে

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে শুক্রবার বামপন্থী কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধর্ষণ বিরোধী লংমার্চে পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমর্থকরা যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী শহীদ মিনার এলাকায় সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণের বিচারের দাবিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে লংমার্চ শুরু করে বামপন্থী সংগঠনগুলোর চারশো’র বেশি নেতাকর্মী। যাত্রাপথে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করে রাতে ফেনীতে অবস্থান করে তারা।

শনিবার সকালে ফেনীর শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সময় এক পর্যায়ে সমাবেশে অংশ নেয়াদের কয়েকজনের ওপর স্থানীয় কয়েকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ঢাকা থেকে লংমার্চে অংশ নেয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা।

মি. রানা বলেন, “সমাবেশের সময় নেতাকর্মীদের সাথে এক দফা সংঘর্ষ হয় স্থানীয়দের। এরপর সমাবেশ স্থল থেকে কিছুটা দূরে গাড়িতে ওঠার সময় আমাদের বাসের ওপর হামলা চালানো হয়। প্রায় প্রত্যেকটি বাস ভাঙচুর করা হয়, অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।”

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মাসুদ রানা অভিযোগ তোলেন যে, হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত।

তবে ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদন সুশেন চন্দ্র শীল বলেন আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত কেউ নয়, বরং স্থানীয় সাধারণ মানুষই ক্ষুদ্ধ্ব হয়ে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

মি. শীল বলেন, “তারা যেখানে সমাবেশ করছিল তার কাছে স্থানীয় সাংসদ নিজাম হাজারির চারটি প্ল্যাকার্ড রয়েছে, যেগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। তাদের সমাবেশের লোকজন ঐ প্ল্যাকার্ডগুলোতে লাল মার্কার দিয়ে ‘ধর্ষকদের পাহারাদার’, ‘ধর্ষকদের গডফাদার’, ‘রেপিস্ট’-এর মত আপত্তিজনক কথা লিখেছে।”

“বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবির ওপর এগুলো লেখা দেখে স্থানীয় জনগণই ক্ষুদ্ধ্ব হয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে। হামলার সাথে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।”

সংঘর্ষের ঘটনা লংমার্চে অংশগ্রহণকারীদের ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস’ এবং এর সাথে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে ফেণী জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।

পুলিশ কী বলছে?

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন লংমার্চে অংশগ্রহকারীদের ওপর হামলার কথা স্বীকার করলেও ঐ ঘটনায় সর্বোচ্চ ‘চার- পাঁচজন’ আহত হয়েছেন বলে জানান।

আলমগীর হোসেন জানান, “বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত স্থানীয় এমপি সাহেবের প্ল্যাকার্ডের ওপর ‘ধর্ষকদের পাহারাদার’ লেখায় এমপি সাহেবের সমর্থকরা ক্ষুদ্ধ্ব হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।”

আলমগীর হোসেন বলেন প্রথম দফায় তেমন সংঘর্ষ না হলেও লংমার্চে অংশ নেয়া সদস্যরা যখন নিজেদের বাসের দিকে ফিরে যেতে থাকে তখন সাংসদের সমর্থকরা তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং তখন দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

প্ল্যাকার্ডের ওপর ঐ লেখাগুলো লংমার্চে অংশগ্রহণকারীরা পুলিশের সামনেই লিখেছেন বলে নিশ্চিত করেন আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, “সমাবেশ চলাকালীন সময় পুলিশ সদস্যদের সামনেই তারা প্ল্যাকার্ডে লাল কালি দিয়ে লেখাগুলো লেখে। সেসময় পুলিশ তাদের নিষেধ করলেও তারা আগ্রাসী আচরণ করে।”

বিবিসি

পূর্ববর্তি সংবাদউপনির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, কোথাও কোনো অসুবিধার সৃষ্টি হয়নি: সিইসি
পরবর্তি সংবাদধর্ষণ রোধে কোরআনি আইন চালু করতে হবে: পিরোজপুর উলামা পরিষদ