পচা পেঁয়াজ আসার একদিন পরেই রপ্তানি বন্ধ করল ভারত

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ৫ দিন আটকে থাকার পর শনিবার ৭২১ মেট্রিকটন (৩১ ট্রাক) পিয়াজ ভারতের ঘোজাডাঙ্গা দিয়ে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করলেও তার অধিকাংশই ছিল পচা।

একইভাবে রফতানি জটিলতার কারণে সীমান্তে লোড অবস্থায় থাকা পেঁয়াজগুলো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা হলেও অধিকাংশ পেঁয়াজই পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

ফলে আড়াই হাজার টাকা দামের পিয়াজের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১শ টাকা দরে। এরপরেও কিনছেন না অনেকে। কেউ কেউ ফেলে দিচ্ছেন বস্তাসহ পিয়াজ। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আড়ৎগুলোতে দেখা যায়, শনিবার ভারত থেকে আমদানিকৃত পিয়াজগুলোর বেশির ভাগ গরমে পচে গিয়ে পানি ঝরছে। দুর্গন্ধ ছড়ানোয় রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে পথচারীদের। অন্যদিকে লোড-আনলোড এর কাজ করতেও অনিহা প্রকাশ করতে দেখা গেছে শ্রমিকদের। আর পচা পিয়াজ প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১শ টাকা দরে। যার স্বাভাবিক বাজার মূল্য আড়াই হাজারের বেশি।

কিন্তু একদিন পরই অর্থাৎ রোববার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আবার রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রোববার বিকেল পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজবাহী কোনো ট্রাক দেশে প্রবেশ করেনি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নতুন করে নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানির সম্ভাবনা নেই।

গত সোমবার ভারত সরকার হঠাৎ করে কোনও কিছু না জানিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এর পরে শুক্রবার একটি নোটিফিকেশন জারি করে যে, গত রবিবার টেন্ডার হওয়া পেঁয়াজগুলো তারা রফতানি করবে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সেই নোটিফিকেশন মোতাবেক অনুমতি দেওয়ায় শনিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে মাত্র ১১টি ট্রাকে ২৪৬ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। যে ১১ ট্রাক পেঁয়াজ রফতানি করেছে, তার অধিকাংশ পেঁয়াজই ইতোমধ্যে পচে নষ্ট হয়ে পানি ঝরছে। এ কারণে আমদানিকারকরা এসব পেঁয়াজ নিয়ে এসেও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শনিবার আমদানি করা পেঁয়াজগুলো পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকে পড়ে। অতিরিক্ত গরমে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ায় হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকেরা বিপাকে পড়েছেন। তারা আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।

এদিকে বন্দরের মোকামে একটু ভালো মানের পেঁয়াজ পাইকারি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও পচা বা নষ্ট পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র ১৩ সেপ্টেম্বর এলসি করা পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়। ফলে গত শনিবার সীমান্তে আটকে থাকা ১১টি ট্রাকে ২৪৬ টন পেঁয়াজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আমদানি করা হয়। তবে সীমান্তে আটকে থাকা ১০ হাজার টন পেঁয়াজের অনুমতি দেয়া হয়নি। এ কারণে রোববার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।

তিনি আরো জানান, শনিবার যেসব পেঁয়াজ দেশে নেয়া হয়েছে তার অধিকাংশই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা অর্ধ কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপতানি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সীমান্তে ২৫০-৩০০ পেঁয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়ে।

পূর্ববর্তি সংবাদকাশ্মীর সীমান্তে অতিরিক্ত ৩ হাজার সেনা মোতায়েন ভারতের
পরবর্তি সংবাদআল্লামা আহমদ শফী রহ.কে নিয়ে বরেণ্য ঐতিহাসিক ড. আলী সাল্লাবীর অনুভূতি