ঈদের পর মাছের বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে, দাম কমেছে

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। তাই দামও আগের চেয়ে কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর মাছের বাজারে এখন ইলিশের ক্রেতা বেশি।

মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের মাছবাজারে এক কেজির ইলিশ গতকাল সকালে বিক্রি হচ্ছিল সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। আর মাঝারি আকারের ৮০০ গ্রাম ওজনের একেকটি ইলিশের দাম ছিল ৫০০ টাকা। ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ৩৫০ টাকায়। মাছ ব্যবসায়ী আনন্দ রাজবংশী বললেন, প্রচুর ইলিশ আসছে। সে কারণে দাম কমেছে। ইলিশের বাড়তি সরবরাহের কারণে অন্য মাছের দাম বেশি চাইলে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

মিরপুর ৬ নম্বর বাজার ও কারওয়ান বাজারেও ইলিশের দাম মোটামুটি একই রকম। ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারাও পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে প্রচুর ইলিশ বিক্রি করছেন। তাঁদের কাছে দাম আরেকটু কম। পীরেরবাগ এলাকায় বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম ইলিশ প্রতিটি ৬০০ টাকা চাইলেন, যার ওজন এক কেজি বলে দাবি তাঁর।

আগস্টের শুরুতে এত ইলিশ পাওয়ার কারণ কী, ইলিশের মৌসুম কি শুরু হয়ে গেছে, এই প্রশ্নে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ইলিশের মূল মৌসুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস। তবে অনেক সময় নদীতে পানিপ্রবাহ ভালো হলে আগেই ইলিশের মৌসুম শুরু হয়ে হয়। এবারও তাই হচ্ছে। তিনি জানান, আগামী অক্টোবরে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। আগস্ট থেকেই ইলিশ বেশি পরিমাণে পাওয়া ভালো লক্ষণ।

সাধারণত মৌসুমের শুরুর দিকে বাজারে বড় ইলিশের কেজি হাজার টাকার বেশি থাকে। সংকটকালে সেটা দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। এখন এক কেজির ইলিশ ৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যাকে মোটামুটি সহনীয় দামই বলছেন ক্রেতারা। অবশ্য কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মো. সুমন জানালেন, ঈদুল আজহার আগের কয়েক দিন দাম আরেকটু কম ছিল। কারণ, তখন চাহিদা আরও কম ছিল। এখন বেড়েছে।

মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাজার থেকে গতকাল মাছ কিনেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আয়নাল হক। মাঝারি আকারের চারটি ইলিশ তিনি ১ হাজার ৬০০ টাকায় কিনেছেন। তিনি বললেন, ‘কয়েক দিন কোরবানির মাংস খাওয়ার পর স্বাদ বদল করতে মাছ কিনতে এসেছি। বাজারে দেখলাম, ইলিশের দামই তুলনামূলক কম।’

ইলিশের দামে তুলনামূলক স্বস্তি থাকলেও সবজির দাম আগের মতোই চড়া। বেশির ভাগ সবজি প্রতি কেজি ৬০ টাকা। কিছুটা কম দামের মধ্যে সবজির তালিকায় রয়েছে মিষ্টিকুমড়া, কেজি ৩০ টাকা। কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. সুলতান বললেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে সবজির সরবরাহ খুবই কম।

মোটামুটি চড়া ডিম ও কক মুরগির দাম। ঈদের পরে পাড়ার কোনো কোনো দোকানে ডিমের ডজন ১২০ টাকা দরেও বিক্রি হয়েছে। এখন বড় বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। কক মুরগির কেজি ২৬০ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৪০ টাকা বেশি। অবশ্য ব্রয়লার মুরগির দাম কম। কেজি ১২০ টাকা।

মিরপুরের বাজারে আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ১৪০ টাকা। কিন্তু কারওয়ান বাজারের খুচরা দোকানে আদা ১৪০ টাকা দামেই বিক্রি করতে দেখা গেল। পেঁয়াজের প্রতি কেজি দাম ৪০ টাকা ও রসুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য পণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের নেই।

পূর্ববর্তি সংবাদকানাডায়ও ঘাতক বাহিনী পাঠিয়েছিলেন মোহাম্মাদ বিন সালমান
পরবর্তি সংবাদযমযম : চিরবহমান পবিত্র ঝর্ণাধারা