অযোধ্যায় রামমন্দির নিয়ে পাক-ভারতের বাকযুদ্ধ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: শহীদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল পাকিস্তান। বুধবার(৫ আগস্ট) দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, পাঁচ শতাব্দী ধরে ভারতের অযোধ্যা শহরে বাবরি মসজিদের অবস্থান। মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণ ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের আগ্রাসনের পরিচয় বহন করে।

প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের বক্তব্য সাম্প্রদায়িক। পাকিস্তান বলেছিল, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ অন্যায়, অনুচিত। ভারতের সুপ্রিমকোর্টের রায়কেও তারা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে বিবৃতি দিয়েছিল।

গত বুধবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান হয়। রুপোর ইট বসিয়ে তার সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই দিনই পাকিস্তান অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, যে প্রক্রিয়ায় ভারত রামমন্দির তৈরি করছে তা অন্যায়। বস্তুত, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়কেও কার্যত চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। বলা হয়, অযোধ্যা মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় ‘ত্রুটিপূর্ণ’।

পাকিস্তানের এই মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতের বিদেশমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কোনও অধিকার নেই পাকিস্তানের। পাক বিবৃতিকে সাম্প্রদায়িক এবং উস্কানিমূলক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনুরাগ বলেছেন, ”পাকিস্তানের কাছ থেকে অবশ্য এমন মন্তব্যই প্রত্যাশিত। ওরা অন্য দেশে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দেয়। নিজের দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার ছিনিয়ে নেয়। তবে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা নিন্দাজনক।”

১৯৯২ সাল থেকে অযোধ্যা খবরের শিরোনামে। বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে বহু জলঘোলা করা হয়েছে। বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তারপর দীর্ঘদিন তা আদালতে বিচারাধীন ছিল। প্রথমে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এ বিষয়ে রায় দান করে। পরে মামলা গড়ায় সুপ্রিমকোর্টে। ২০১৯ সালে সুপ্রিমকোর্ট বিতর্কিত অঞ্চলে রামমন্দির বানানোর অনুমতি দেয়।

গত এক মাসে একাধিক বার ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বাকযুদ্ধ হয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী দেশের মানচিত্রে কাশ্মীর এবং গুজরাটের কিছু অংশ সংযোজন করায় ভারত তার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। পাকিস্তানে একটি গুরুদ্বারকে মসজিদ বানানোর বিরোধিতা করে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল ভারত। পরে কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের এক বছর পূর্তি উপলক্ষেও দুই দেশের মধ্যে কড়া মন্তব্য চালাচালি হয়। বস্তুত, প্রথম থেকেই পাকিস্তান এর বিরোধিতা করছে। জাতি সংঘেও বার বার বিষয়টি উত্থাপন করার চেষ্টা চালিয়েছে। যেখানে চীনকে পাশে পেয়েছে তারা। তবে রামমন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে এই প্রথম পাকিস্তান সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করল।

পূর্ববর্তি সংবাদবন্ধুকে হত্যা করে তারই জানাযায় অংশ গ্রহণ করে কিশোর
পরবর্তি সংবাদ‘শেখ হাসিনা সরকারের শেকড় এদেশের মাটির অনেক গভীরে, গুজব রটিয়ে কোনো লাভ হবে না’