রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর আগামি মাসে, নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই ভারতের অযোধ্যায় শহিদ করা বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে। সম্প্রতি লাদাখে ভারত চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনায় অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থলে রাম মন্দির নির্মাণ কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হলেও এখন পুনরায় ভিত্তিপ্রস্তরের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ডাক পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার জন্য ৩ এবং ৫ অগাস্টকে কথিত ‘শুভদিন’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যে কোনও এক দিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে। ঐসময় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ‘শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র’ ট্রাস্ট।

সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মন্দির নির্মাণে অনুমতি দেওয়ার পর এ বছর ৫ ফেব্রুয়ারি ‘শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র’ ট্রাস্ট গঠন করে কেন্দ্র। তাদের তত্ত্বাবধানেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানানো হয়। তার কিছু দিনের মধ্যেই নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, করোনা সঙ্কটে সেই কাজ থমকে যায়।

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে শনিবার জরুরি বৈঠক করে ওই সংগঠন। সেখানেই ৩ অথবা ৫ অগাস্ট মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠক শেষে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট নৃত্যগোপাল দাসের মুখপাত্র মহন্ত কমলনয়ন দাস বলেন, ‘‘গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান দেখে ৩ এবং ৫ অগাস্টকে শুভ দিন হিসেবে বেছে নিয়েছি আমরা। তার মধ্যে যে কোনও এক দিন আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।’’ শনিবারের ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন উত্তরপ্রদেশের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি অবনীশ অবস্থিও। ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই জানান, মন্দির নির্মাণের জন্য দেশের ১০ কোটি মানুষের থেকে চাঁদা তোলা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।

মন্দির নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান চম্পত রাই। তিনি বলেন, ‘‘লারসেন অ্যান্ড টারবো সংস্থা মাটি পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করছে। ভূগর্ভের ৬০ মিটার নীচে মাটির ক্ষমতা কেমন, তা যাচাই করেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের চূড়ান্ত নকশা তৈরি করা হবে। কাজ শুরু হবে তার পর।’’ ট্রাস্টের সদস্য কমলেশ্বর চৌপাল জানান, মন্দিরের উচ্চতা হবে ১৬১ ফুট। মোট পাঁচটি গম্বুজ থাকবে। তবে মন্দিরের নকশা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বরে অযোধ্যার ওই জায়গায় রামমন্দির নির্মাণে অনুমতি দেয় দেশটির শীর্ষ আদালত। মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমির বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণের রায়ে মুসলমানরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই রায়ে উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি সৃংখলা বিপন্ন করার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের সাথে হিন্দু সম্প্রদায়ের নতুন করে দাঙ্গা সৃষ্টির রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পাঁচ শতবৎসরের ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণের রায়ে বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করা হয়েছে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

পূর্ববর্তি সংবাদরিজেন্টে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণে আইনি নোটিশ
পরবর্তি সংবাদলকডাউনের মধ্যেও ওয়ারীতে কমছে না শনাক্তের হার