ইসলাম টাইমস ডেস্ক: চলমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী।
মঙ্গলবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান ইত্তেফাক নেতৃবৃন্দ।
ইত্তেফাক নেতৃবৃন্দ বলেন, এই করোনাকালে ব্যক্তি, পরিবার, এমনকি রাষ্ট্র পর্যন্ত সংকটময় পরিস্থিতির শিকার। এই সংকট থেকে মুক্ত নয় ঈমান ও দ্বীনি শিক্ষার বাতিঘর কওমি মাদরাসাগুলো। শিক্ষাবর্ষ সমাপ্তির আগেই মাঝপথে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমনিতেই পড়াশোনার পাশাপাশি বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমতাবস্থায় জনসাধারণের অর্থ সহায়তায় পরিচালিত কওমি মাদরাসাগুলো সাধারণভাবে রমজানুল মোবারকে বিত্তবানদের প্রদত্ত যাকাত সংগ্রহ করে লিল্লাহ বোর্ডিং এর বকেয়া পরিশোধ করে থাকে। এই ফান্ড থেকে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণ সহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়ে থাকে। সারা বছর ব্যয়ভার বহন করে প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে, রমজান মাসে সংগৃহীত টাকা থেকে সে ঋণ পরিশোধ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর করোনার কারণে মাদরাসাগুলো যাকাতের অর্থ সংগ্রহের জন্য দাতাদের কাছে যেতে পারছে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্যদিকে যাকাতদাতারাও মানবিক ত্রাণ সহায়তায় অর্থ ব্যয় করার কারণে কাঙ্খিত পরিমাণ অর্থ মাদরাসার ফান্ডে দিতে পারছেন না। ফলে মাদরাসাগুলো বিপুল ঋণের বোঝা নিয়ে রয়েছে চরম বেকায়দায়।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কওমি মাদরাসার শিক্ষকরা ৫/১০ হাজার টাকা বেতনে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। নির্ধারিত বেতনও প্রতিমাসে নিয়মিত পরিশোধ হয় না, তবুও তারা দ্বীনের স্বার্থে হাসিমুখে এই মেহনত করে যান। দেখা যায় সারা বছর বেতন নেওয়ার পর যা বকেয়া থাকে রমজানুল মোবারকে তার অনেকটাই পরিশোধ হয়ে যায়। কিন্তু এবার আকস্মিক মাদরাসাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমনিতেই তারা ২/৩ মাস যাবত বেতন পাচ্ছেন না। উপরন্ত এবারের রমজান এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে। দাতাগোষ্ঠীর ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় তারা সেভাবে সহযোগিতা করতে পারছেন না। ফলে শিক্ষকরা অর্থসংকটে নীরবে-নিভৃতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কর্তৃপক্ষও অর্থ সংস্থান করতে না পেরে হয়রান পেরেশান হচ্ছেন। এমতাবস্থায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে শুভানুধ্যায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে ভাড়া বাসায় গড়ে ওঠা মাদরাসাগুলোর ক্ষেত্রে বাসার মালিকদের প্রতি সংকটকালীন এসময়টাতে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ইত্তেফাকুল উলামা বর্তমান সংকটকারীন সময়ে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে অসহায় মানুষের জন্য বেশ কিছু সহযোগিতামূলক কার্যক্রম সফলতার সাথে আঞ্জাম দিয়েছে। সংগঠনটি এখনও সাধ্যমত তাদের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী মজলিসে শুরার সভাপতি আল্লামা আব্দুর রাহমান হাফেজ্জী, কেন্দ্রীয় আমেলার সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মন্জুরুল হক, সহ সম্পাদক মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ, মুফতি মাহবুবুল্লাহ,কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক মুফতি আমীর ইবনে আহমদ ও মুফতি শরীফুর রহমান প্রমুখ এ আহবান জানান।