করোনায় অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার: সঙ্কট এবং উত্তরণ প্রসঙ্গে যা বললেন আলেমরা

তারিক মুজিব ।।

বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মহামারী করোনা ভাইরাস। ভয়াবহ এই ভাইরাসে ব্যাপক প্রাণহানীর পাশাপাশি স্থবির হয়ে আছে পুরো বিশ্ব। লকডাউন, শাটডাউন, কারফিউ চলছে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে। বিশ্ব অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়েছে। পণ্যের আমদানি, রপ্তানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য তুলনামূলক বেড়ে গেছে।

তবে বাংলাদেশসহ বেশ কিছু রাষ্ট্রে সঙ্কটকালীন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। মানুষের অপরগতার সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা লুটে নিচ্ছে মুনাফা। নিত্যপন্যের পাশাপাশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতায়াত ভাড়াও। এতে মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।

পণ্যের অন্যায্য মূল্যবৃদ্ধি এবং যাতায়াত ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রীদের বিপাকে ফেলার বিষয়ে কথা হয় দৈনিক নয়া দিগন্তের বিভাগীয় সম্পাদক প্রবীণ আলেমেদ্বীন ও বিশিষ্ট লেখক সাংবাদিক মাওলানা লিয়াকত আলী এবং চট্টগ্রামের ওমর গণি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট লেখক আলোচক ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে।

মাওলানা লিয়াকত আলী বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে পণ্যের অন্যায্য মূল্য বাড়িয়ে মুনাফা অর্জন মানবিকতা এবং শরিয়তের দৃষ্টিতে চরম অন্যায়। মানুষের নানা মাত্রিক সামাজিক অবক্ষয়ের একটি নমুনা এটি। মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে ব্যবসা করা মানসিক বিকারগ্রস্ততার পরিচায়ক।

এর সাথে যোগ করে ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ বলেন, আমাদের দেশেই দেখা যায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সঙ্কটকে পুঁজি করে ব্যবসা করে। বিপদে মানুষকে সাহায্য করা মানবিক এবং নৈতিক দায়িত্ব হলেও এ দেশে তার দেখা পাওয়া যায় কম। করোনা পরিস্থিতি ছাড়াও রমযানে বা অন্যান্য সঙ্কটের মুহূর্তেও নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অথচ এসব মুহূর্তে মানবিকতার দাবি ছিল মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা।

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী দেশে সকল পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে মন্তব্য করে ড. খালিদ বলেন, অসাধু ব্যবসায়ী কেবল বাড়তি মুনাফার জন্যই মানুষের সাথে চরম প্রহসনমূলক আচরণ করে। তবে সঙ্কটের সামান্য আভাস পেলেই পণ্য ক্রয়ে জনগণের হুমরি খেয়ে পড়াও ব্যবসায়ীদের অসাধু করে তুলতে সাহায্য করে বলে মন্তব্য করেন এই বিশিষ্ট লেখক কলামিস্ট।

এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য প্রশাসনের ব্যাপক নজরদারি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন মাওলানা লিয়াকত আলী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসন বিভিন্ন জায়গায় উদ্যোগ নিয়ে বাজার দর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে খবর আসছে। তবে সে উদ্যোগকে আরও ব্যাপক করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সঙ্কট উত্তরণ প্রসঙ্গে ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হুসাইন বলেন, গতকাল থেকে দেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী উদ্যোগ নিয়ে বাজারের প্রবাহকে ঠিক করতে পারে। যেখানে যেখানে অসঙ্গতি দেখা যাবে, সেখানেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তাহলে মানুষ করোনার সঙ্কটময় মুহূর্তে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বাড়তি ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে।

পূর্ববর্তি সংবাদনিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তি সংবাদআজ চাঁদ দেখা যায়নি, শুক্রবার শাবানের প্রথম দিন