সিএএ’র বিরুদ্ধে জাতিসংঘের উদ্যোগ, বিড়ম্বনায় মোদি সরকার

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ভারতে সামপ্রদায়িকতাদুষ্ট সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সাংবিধানিক বৈধতা মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ। এতে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিড়ম্বনা বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার রক্ষা হাইকমিশনার কার্যালয় এই মর্মে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দাখিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের কথা তারা জেনেভায় ভারতের স্থায়ী দূতাবাসকেও জানিয়ে দিয়েছে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক এ সংগঠনের পক্ষে এ ধরনের পদক্ষেপ বিরল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ‘সিএএ একান্তভাবেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতীয় সংসদ যেকোনো ধরনের আইন প্রণয়নের অধিকারী। সেটা দেশের সার্বভৌম অধিকার।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ মঙ্গলবার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ভারতের সার্বভৌম অধিকার নিয়ে কোনো বিদেশির প্রশ্ন তোলার কোনো এখতিয়ারই নেই।’

সিএএর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা করা হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা তাতেই পক্ষ নিতে চায়। সাংবিধানিক বৈধতার প্রশ্ন অমীমাংসিত থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত, সিএএ সাংবিধানিক দিক থেকে বৈধ। এই আইন সাংবিধানিক মূল্যবোধের বাহক। দেশভাগ মানবাধিকার–সংক্রান্ত যেসব প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, এই আইন তার সুরাহা করতে চায়। ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দেশে আইনের শাসন বিদ্যমান।’

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে ওইসব দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে চলে এসেছেন এই আইনে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না বলে সাব্যস্ত হয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের এই সংশোধন গত ডিসেম্বরে ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পাস হয়। সেই থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই আইনে এবং তার পাশাপাশি সারা দেশের জন্য জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরির (এনআরসি) উদ্যোগের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। সুপ্রিম কোর্টে এই সংশোধিত আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ হয়েছে।

এনআরসি, সিএএ- এই আইন দুটির বিরুদ্ধে  দিল্লিতে শাহিনবাগ অঞ্চলে স্থানীয় মানুষজন দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে পথ অবরোধ করে আন্দোলন চালাচ্ছেন। আইনের পক্ষে-বিপক্ষে দুই ভাগ হয়ে গেছে দেশ। দিল্লির সাম্প্রতিক দাঙ্গার প্রত্যক্ষ কারণও এই আইন ও আন্দোলন। জাতিসংঘের মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের সেই মামলায় ‘পার্টি’ হতে চাওয়ার আবেদন বিতর্কটিকে অন্য এক মাত্রা দিল। এর আগে এই সংস্থা আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছিল।

পূর্ববর্তি সংবাদকরোনা আতঙ্ক: প্রয়োজন ছাড়া বিদেশে যাতায়াত বন্ধ রাখার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
পরবর্তি সংবাদভোটের পর সরকার এ জাতিকে বিদ্যুত ও পানিতে মারতে চায়: হাবিব-উন-নবী