মশা মারার ফগার মেশিন থেকে বের হচ্ছে আগুন, দায় নিচ্ছে না কেউ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে জরুরিভাবে কেনা মশা মারার ফগার মেশিনগুলো থেকে ওষুধ মেশানো ধুয়া না বের হয়ে আগুন বের হচ্ছে। জানা গেছে, গত বছরের ডেঙ্গু মৌসুমে জরুরি প্রয়োজনে টেন্ডার ছাড়াই কেনা হয়েছে জার্মানির তৈরি দুইশ’ ফগার মেশিন ও পাঁচটি ভেহিক্যাল মাউন্টেন্ড ফগার মেশিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেশিনগুলো সফলভাবে ব্যবহার করতে পারেনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

এই ফেব্রুয়ারিতে নগরবাসী মশার উৎপাতে যখন নাকাল, তখন মশামারার ফগার মেশিনগুলোর এই দুরাবস্থার প্রকাশ হলো। উপরন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো কাছ থেকে কোনো সদুত্তরও পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযোগ উঠেছে, মেশিনগুলো চালুর পর পর আগুন ধরে যায়। ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই এগুলো কেনা হয়েছে। ফলে সংস্থাটির কমপক্ষে সাড়ে চার কোটি টাকা গচ্চা গেছে। মশা নিধন প্রোগ্রামেও সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার।

গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর পুলিশ কনভেনশন হলের পেছন থেকে মশা নিধনে দুই সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে ডিএনসিসি। উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভেহিক্যাল মাউন্টেন্ড ফগার মেশিন দুটি চালুর চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ চেষ্টার পর একটি চালু হলেও সেটি থেকে বিপজ্জনকভাবে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বের হতে থাকে। অন্যটি কিছুসময় চললেও পরে নল থেকে স্ফুলিঙ্গ বের হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান ক্রয় ও ভান্ডার কর্মকর্তা মো. সগীর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনও হাত নেই। আমাদের একটি ক্রয় কমিটি আছে। কমিটি যেই মেশিনগুলো কেনার জন্য সুপারিশ করে, আমরা সেগুলোর জন্য প্রক্রিয়া শেষ করি। আমাদের কাছে যেই অর্ডার এসেছে, সেই অর্ডার অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি।’

ক্রয় কমিটির প্রধান ও ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাইয়ের সঙ্গে কয়েকদিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ডিএনসিসির ভান্ডার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, গত ডেঙ্গু মৌসুমে জরুরি ভিত্তিতে বেশকিছু মশা নিধন যন্ত্রপাতি কেনে ডিএনসিসি। তবে এজন্য কোনও টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই পুরো কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন পণ্য কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে সেটাও অনুমোদনের আগেই ঠিক করে নেওয়া হয়েছিল। ‘জরুরি’ অবস্থার বথা বলে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে পাস করে নেওয়া হয়।

প্রতিটি মেশিনের দাম ধরা হয় ১০ লাখ ৫০ হাজার ৬০০ টাকা। এই পাঁচটি মেশিনের মধ্যে দুটি মেশিন আগেই গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএনসিসির একাধিক মশক নিধন কর্মী জানান, আগের ফাল্স ফগ মেশিনগুলো অনেক ভালো। ১৯৯০ সাল থেকে দুই সিটিতে এই মেশিনগুলো ব্যবহার করা হয়। সেগুলোতে উল্লেখযোগ্য কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন জার্মানির কথা বলে যেসব মেশিন আনা হয়েছে, সেগুলো চালানো যায় না। সামান্য সময় চালালেই আগুন ধরে যায়। মেশিনগুলো গরম হয়ে যায়। তখন মেশিনগুলো ফের চালুও করা যায় না।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

পূর্ববর্তি সংবাদ‘কচুরিপানা খাওয়া’র ব্যাখ্যা দিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
পরবর্তি সংবাদআবারও পানির দাম বাড়াবে ওয়াসা