যোগী বললেন, দেশ স্বাধীনের পর মুসলিমরা ভারতের কোনো কাজে আসেনি

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে দেশ স্বাধীনের পর যেসব মুসলমান ভারতে থেকে গিয়েছিলেন, তারা ভারতে থেকে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে ‘ধন্য’ করেননি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির দেশটির ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

বিবিসি হিন্দিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীরা ভারতে ‘বিভাজনের আগুন’ উস্কে দিচ্ছে। ভারতে পাশ হওয়া মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতাকারীদের উদ্দেশ্য করে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

এছাড়া তিনি দাবি করেন, “পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে মুসলমানেরা কষ্টে নেই, সেসব জায়গায় কষ্টে আছে হিন্দু, জৈন এবং শিখরা। সুতরাং তাদের সুরক্ষা প্রয়োজন।”

মি. আদিত্যনাথ ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা। ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের অন্তত এক চতুর্থাংশ এ রাজ্যে বাস করেন।

সম্প্রতি তার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের দমনে, বিশেষ করে মুসলমানদের ওপর অতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রমাণসহ উদাহরণ দেবার পরেও মি. আদিত্যনাথ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তবে, ৪৭ বছর বয়েসী, সর্বদা গেরুয়া কাপড় পরিহিত, প্রভাবশালী এক হিন্দু মন্দিরের পুরোহিত এই রাজনীতিবিদের জন্য বিতর্কিত মন্তব্য নতুন কোন ব্যাপার নয়। কট্টর মন্তব্য বিশেষ করে মুসলমানবিরোধী মন্তব্যের জন্য তিনি বহুবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, যা সংক্ষেপে সিএএ নামে পরিচিত, পার্লামেন্টে পাশ হওয়ার পরে দেশ জুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হলে, কিছু ক্ষেত্রে তার মন্তব্য আরো ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা সব অমুসলমানদের অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমানদের টার্গেট করার অভিযোগে এ আইন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে এবং দেশের বহু জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে।

এর মধ্যে শাহীন বাগের বিক্ষোভ উল্লেখযোগ্য, যেখানে শত শত মুসলমান নারী এক মাসের সময় ধরে বিক্ষোভ করছেন।

সরাসরি নাম উল্লেখ না করে মি. আদিত্যনাথ শাহীনবাগের বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে বলেন, “কিছু সম্প্রদায়ের পুরুষ লোকেরা কাপুরুষ, তারা কম্বল মুড়ি দিয়ে বাড়িতে বসে আছে। আর মহিলা ও বাচ্চাদের বাড়ির বাইরে এই আইনের বিরোধিতা করতে পাঠিয়েছে।”

ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা নিয়ে তিনি বলেন, “ভারতে নাগরিকত্ব আইন আগেই প্রণয়ন করা হয়েছিল, দেশভাগের পরেই। এখন কেবল তাতে একটি বাড়তি লাইন যুক্ত করা হয়েছে। এখন তার বিরোধিতা করছে কংগ্রেস। কিন্তু এই আইন যখন প্রণয়ন করা হয় তখন তো তারাই ক্ষমতায় ছিল।

পূর্ববর্তি সংবাদকাদিয়ানী সম্প্রদায় কেন মুসলমান নয়
পরবর্তি সংবাদ‘গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে জেলায় জেলায় গোয়েন্দা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে’