ঢাবিতে শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের পেটানো : যা বললেন দুই আলেম রাজনীতিক

তারিক মুজিব ।।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার পর এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটল চার শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে বেধরক পেটানোর ঘটনা। গত মঙ্গলবার রাতে ঢাবির শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের চার শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে সারারাত লাটি দিয়ে পিটায় হলের ছাত্রলীগ নেতারা।

শিবির সন্দেহে হত্যা বা পেটানোর ঘটনা এটাই নতুন না বা আবরারের ঘটনাই প্রথম ছিল না। বরং দীর্ঘদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে বিরোধীদের দমনে ‘শিবির ট্যাবু’ লাগিয়ে তাদের নানাপ্রকারের নির্যাতনের খবর বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে এসেছে।

ভার্সিটির হল বা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ট্যাবু লাগিয়ে নিপীড়ন প্রসঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব, আরযাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসনের প্রকট অনুপস্থিতির বড় নজির এ জাতীয় ঘটনা। কোনো ব্যক্তিকেই অপর কোনো ব্যক্তি হত্যা তো দূরের কথা তাকে অপমান বা নাজেহাল করারও অধিকার রাখে না। সে যে কোনো দলেরই হয়ে থাকুক। এটা নিন্দাজনক ঘটনা। কিছুদিন পর পর এ জাতীয় ঘটনার প্রকাশ পাওয়া উদ্বেগজনক।

মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেন, ভার্সিটির সকল ছাত্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বারবারই ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে তারা দুঃখপ্রকাশ শুধু করেন। আসলে এ জাতীয় ঘটনা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ঘটে অথবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতিপয় ক্ষমতাশীল ছাত্রের হাতে জিম্মি। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তাদের স্বপদে বহাল থাকার কোনো বৈধতা থাকতে পারে না।

এদিকে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রথমত কাউকে শিবির সন্দেহ হলেই মারতে হবে এটার বৈধতা কোত্থেকে পাওয়া গেলো? শিবির তো এখন পর্যন্ত নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। দ্বিতীয়ত শিবির হওয়া যদি অপরাধই হয় সেই অপরাধ দমনের দায়িত্ব ছাত্রলীগকে কে দিলো? আসলে ছাত্রলীগ কাউকে মারার আগে শিবির ট্যাগ লাগিয়ে অবৈধ পন্থায় নির্লজ্জভাবে তাদের অপকর্মের আইনি বৈধতা দিতে চায়। আর দেশেও তোষামোদকারী একটি শ্রেণি তৈরি হয়েছে ‘শিবির’ নাম শুনার পরে তাদের চেতনা জেগে ওঠে। যেন মেরে ছাত্রলীগ ভাল কাজ করেছে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, এগুলো আসলে দেশের সামগ্রীক অবনতির খণ্ডচিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আইনের শাসন না থাকা প্রমাণ করে দেশে আসলে কেউই নিরাপদ না।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রত্যেককে নিজ অবস্থান থেকে যাবতীয় অন্যায়ের প্রতিবাদ করা জারি রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের এ যুগ্ম মহাসচিব।

পূর্ববর্তি সংবাদহজযাত্রীদের প্লেন ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
পরবর্তি সংবাদআগামী বছর থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত