একজন পাদ্রীর ইসলাম গ্রহণ ও তার বিস্ময়কর জানাযা

আবদুল্লাহ মালিক ।।

ডক্টর ইমদাদ হাসান সুদানের একজন মুসলিম সাইক্রিয়েস্ট্রিট, যিনি লন্ডনে থাকেন। তিনি ইসলামের দাওয়াতে অত্যন্ত নিবেদিত। একে তিনি প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব বলেই বিশ্বাস করেন। কয়েক বছর পূর্বে ড. ইমদাদ ৪০০ পৃষ্ঠার একটি গবেষণামূলক বই প্রকাশ করেন, যার নাম ক্যাটেলস ওয়ার্স। বইয়ের বিষয় উপস্থাপন আমার লক্ষ নয়, কিন্তু বইয়ের ভূমিকায় তিনি একটি বিস্ময়কর ঘটনা উল্লেখ করেছেন। ঘটনাটি নিম্নরূপ:

ড. ইমদাদের সাথে ৬২ বছর বয়স্ক একজন পাদ্রী টেরেন্স সিডনি ক্যাসের সাক্ষাৎ হয়। তখন টেরেন্স-এর কিছু চিকিৎসা পরামর্শ প্রয়োজন ছিল। অল্প সময়ের কথোপকথনেই উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। দুজনে তাদের বিশ্বাস, চিন্তাধারা ইত্যাদি নিয়ে আলাপ করেন। পাদ্রী টেরেন্স স্বীকার করেন যে, তার একচল্লিশ বছরের কর্মজীবনে কখনোই ত্রিত্ববাদে বিশ্বাস করেননি। টেরেন্স নিজেকে হানীফ বলে পরিচয় দিলেন, যার অর্থ হযরত ইবরাহীমের ধর্ম অনুসরণকারী। ড. ইমদাদ টেরেন্সকে একটি বই দিলেন যাতে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহের উদ্ধৃতিতে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের আলোচনা ছিল। টেরেন্স ড.ইমদাদকে আরবী ও ইংরেজি অনুবাদ সম্বলিত বাইবেলের একটি কপি দিলেন, কিন্তু জানালেন, আমার যেহেতু বাইবেলের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সন্দেহ আছে তাই সব সময়ই আশা ছিল কোনো আরবের সাথে সদি সাক্ষাৎ হত যিনি আমাকে বাইবেলের বিকৃত অংশগুলি বুঝিয়ে দিতেন।

ইতিমধ্যে টেরেন্সের ক্যান্সার ধরা পড়ল। ডাক্তাররা বললেন, তিনি আর চার মাসের মতো বাঁচতে পারেন। ড. ইমদাদ একদিন টেরেন্সকে জিজ্ঞাসা করলেন, এখন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আপনার অনুভূতি কী? টেরেন্স কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। কারণ এখন তার সারা শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে। তার সময় শেষ হয়ে আসছিল। টেরেন্স নীরবতা ভেঙ্গে বললেন, সত্যি বলতে কি ভাই, আমার সারাটা জীবন আমি শেষ নবীকে খুঁজেছি আর এখন মৃত্যুশয্যায় আমি তাঁকে পেয়েছি। সপ্তাহখানেক পর টেরেন্স ইন্তেকাল করলেন।

তার উইলের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের কথা লিখে রেখে যান। তার পরিবারে কেউ জানাযা পড়ার মতো ছিল না। তাই তারা ড: ইমদাদকেই জানাযা পড়ার অনুরোধ করলেন। পশ্চিম লন্ডনের ছোট্ট একটি গ্রামে ড. ইমদাদ তিনশত লোকের উপস্থিতিতে একাই টেরেন্স-এর জানাযা পড়লেন।

 

পূর্ববর্তি সংবাদতুরস্কের উপকূলে নৌকাডুবিতে ১১ অভিবাসীর প্রাণহানি
পরবর্তি সংবাদ‘উগ্রবাদে’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ: যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে সৌদি সেনাদের