খালেদা জিয়াকে সরকার মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে: মির্জা ফখরুল

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কারাগারে বন্দি রেখে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কারাবন্দি চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে সরকার মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

এই মুহূর্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অ্যাডভান্স সেন্টারে পাঠানো প্রয়োজন। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সেই চিকিৎসার সুযোগ নেই বলে আমরা জানি। আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তি দাবি করছি।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে এবং হাসপাতালে তার কিছু হলে এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য কি জানি না। তবে মনে হচ্ছে তারা খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গতকাল খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের স্বজনরা দেখা করেছেন। তারা বলেছেন- তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। তিনি কিছু খেতে পারছেন না, বমি করছেন। খালেদা জিয়া বিছানা থেকে উঠে পায়ে হেঁটে ১০ কদম দূরে বাথরুমে যেতে পারছেন না। দুই জনের সাহায্য নিয়ে তাকে বাথরুমে যেতে হচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে তার নূন্যতম জামিন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার জামিন আটকাতে সরকার পুরো বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মনে করছে, খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বেরিয়ে এলে তারা যেভাবে দেশ পরিচালনা করছে এবং একনায়কতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে তা করতে পারবে না। এই কারণে সরকার তার জামিন দিচ্ছে না।

এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আদালতে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা এখন ক্রিপল্ড অর্থাৎ পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাকে অ্যাডভান্স চিকিৎসা দেওয়া হোক।

ডা. জাহিদ আরও বলেন, এখন প্রশ্ন থাকে বিএসএমএমইউতে যদি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে তাহলে কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে কেন সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলো। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে যদি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব কেনো বিদেশে চিকিৎসা নিলেন? আসলে এসব হাসপাতালে অ্যাডভান্স চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাহলে কিভাবে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা সম্ভব বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

খালেদা জিয়ার বাম পায়ে গুটলি আছে, এটি মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে বলা আছে দাবি করে ডা. জাহিদ বলেন, কিন্তু সেটা কি, পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা, তা আমরা জানি না। চিকিৎসকরাও নিয়মিত তাকে দেখতে যান না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।

পূর্ববর্তি সংবাদইভিএমে নীরবেও কারচুপি হওয়ার সুযোগ নেই: সিইসি
পরবর্তি সংবাদশৈশবের সেই মুয়াজ্জিন