ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নের জন্য ফরম সংগ্রহ করে অশ্রুসজল চোখে সাঈদ খোকন বলেছেন, তার রাজনৈতিক জীবনের কঠিন সময় যাচ্ছে এখন। তার এ কান্না নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
কেউ কেউ মনে করছেন এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ভূমিকা নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে মেয়র পদে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন তিনি। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার কথাই তুলে ধরা হয়েছে।
আগামী ত্রিশে জানুয়ারি ঢাকা সিটি নির্বাচনে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মেয়র সাঈদ খোকন।
ফরম সংগ্রহের পর সাংবাদিকদের সাথে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছেন, তার পিতা অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। তবে পিতার অবর্তমানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীই তার অভিভাবক এবং তিনি মনে করেন সভানেত্রী তার জন্য যেটা ভালো মনে হবে সেই সিদ্ধান্তই নেবেন।
সাঈদ খোকন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা চলছে। কারণ এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে যথাযথ দায়িত্ব পালনে সিটি কর্পোরেশনের দক্ষতা নিয়ে সরকারি দলের অভ্যন্তরেই সমালোচনা অত্যন্ত জোরালো।
পাশাপাশি বারবার চেষ্টা করেও গুলিস্তান এলাকা থেকে হকারদের সরাতে না পারাসহ বেশ কিছু বিষয়েই অনেকে তাকেই দোষারোপ করে থাকেন। দলীয় কয়েকটি সভায় দলের নেতারাই এসব প্রসঙ্গ বারবার তুলে এনেছেন সাম্প্রতিক সময়ে।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করায় অনেকেই মনে করেন এবার তাপসই দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন।
আওয়ামী লীগের নগর কমিটির একজন নেতা অন্তত এক ডজন কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপসের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দুদিন আগে। এর বাইরেও আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমসহ আরও কয়েকজন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
এরপর থেকে মনোনয়ন নিয়ে খোকনের সম্ভাবনা কিংবা বঞ্চনা নিয়ে আলোচনা আরও জোরালো হয়ে উঠে।
এর মধ্যেই আজ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে খোকন দাবি করেছেন তিনি শহরে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছেন।
টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে অশ্রুসজল চোখে সাঈদ খোকন বলেন, “ঢাকাবাসীর সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে পাশে ছিলাম। আজ আমার রাজনৈতিক জীবনের কঠিন সময়। এই কঠিন সময়ে আমি ঢাকাবাসীর প্রতি আহবান জানাই আমার জন্য একটু দোয়া করবেন”।
তিনি বলেন, “অনেক কাজ করেছি, কিছু কাজ বাকী আছে। আমি যাতে কাজগুলো শেষ করে যেতে পারি। আমি আবারও বলি এই ঢাকা শহরের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম”।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকার মানুষের কাছে নিজের জন্য দোয়া চেয়ে সাঈদ খোকন বলেন, “আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলি, আমি কখনো কর্তব্যে অবহেলা করিনি, এই শহরের মানুষের জন্য। আজ এই কঠিন সময়ে যদি এই শহরের মানুষ আমার পাশে দাঁড়ায়, এই দেশের মানুষ পাশে দাঁড়ায় তাহলে আগামী পাঁচ বছর ইনশাল্লাহ আপনাদের পাশে থাকবো”।