‘মুসলিমদের কেন নাগরিকত্ব দেব’

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : ভারতের লোকসভার পর বুধবার রাজ্যসভায়ও পাস হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)। নাগরিকত্ব বিল প্রসঙ্গে লোকসভায় যা ঊহ্য রেখেছিলেন, রাজ্যসভায় তা স্পষ্ট করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, সারা পৃথিবী থেকে যদি মুসলমানরা এসে এ দেশের নাগরিকত্ব চান, তা হলে তা দেয়া সম্ভব নয়। এ ভাবে চলতে পারে না।

বিরোধীদের মতে, এই বিল হল সরকারের আগ্রাসী হিন্দুত্ব নীতির পরিচায়ক। যদিও বিজেপির পাল্টা যুক্তি, দলের ইসতেহারেই বিলটি আনার কথা ছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়েছে।

বিরোধী শিবিরের তীব্র প্রতিবাদ, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই সত্ত্বেও রাজ্যসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব স‌ংশোধনী বিল (সিএবি)। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। ফলে আরও মসৃণ হবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ।

এই বিলে কেন কেবল অমুসলিমদের (হিন্দু, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান, জৈন ও বৌদ্ধ) কেন সুবিধা দেয়া হলো, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মুসলিমদের সঙ্গে বিভাজনের রাজনীতি করার উদ্দেশ্যেই বিলটি আনা হয়েছে।

তবে লোকসভায় এই অভিযোগের স্পষ্ট জবাব দেননি অমিত শাহ। পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, গোটা দুনিয়া থেকেই যদি মুসলিমরা এসে এ দেশে নাগরিকত্ব চান, তাদের সবাইকে কি নাগরিকত্ব দিয়ে দেব? কী করে দেব। দেশ কী ভাবে চলবে, এ ভাবে চলতে পারে না।

তার যুক্তি, প্রতিবেশী তিন দেশের রাষ্ট্রধর্ম হল ইসলাম। সেই কারণে শরণার্থী হিসেবে আসা তিন দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। না হলে উৎপীড়নের শিকার ওই মানুষেরা কোথায় যাবেন।’

এদিকে বিলটি নিয়ে মুসলিম সমাজ আতঙ্কিত বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বহু বিরোধী সংসদ সদস্য।

তারা বলছেন, এনআরসি থেকে নাগরিকত্ব বিল কিংবা ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ— কী কারণে ওই বিলগুলো সরকার আনছে তা সবাই বুঝতে পারছেন। সরকারের পদক্ষেপ দেখে মুসলিম সমাজ ভয়ে রয়েছে।

কংগ্রেসের কপিল সিব্বল প্রশ্ন তোলেন, ‘কোনো অমুসলিম যে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তা কী ভাবে প্রমাণ হবে? কারণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি বলেছিলেন যে কোনো অনুপ্রবেশকারী, তিনি যে ধর্মেরই হন, আসলে তিনি অবৈধ।’

পাঞ্জাবের কংগ্রেস সংসদ সদস্য প্রতাপ সিংহ বাজওয়া জানান, তার রাজ্যে পাকিস্তানের বহু আহমেদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন। ধর্মীয় বৈষম্যের কারণে পালিয়ে আসা ওই মুসলিম নাগরিকদের কেন নাগরিকত্ব দেয়া হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

জবাবে অমিত শাহ বলেন, বিভিন্ন দেশের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ভারত নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে। ওই শরণার্থীরা যদি ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন মেনে আবেদন করেন, তবে খতিয়ে দেখা হবে।

 

পূর্ববর্তি সংবাদভিন্ন ধর্মাবলম্বীর সঙ্গে বিবাহ : কী বলে ইসলাম
পরবর্তি সংবাদফকিরাপুলে পাঁচ তলা ভবনের চিলেকোঠায় নারী-পুরুষের লাশ