বায়তুল মোকাররমে ইমাম ও খতিব নিয়োগে ইফার জালিয়াতির অভিযোগ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম নিয়োগে জালিয়াতি ও ভুয়া মাদরাসার নামধারী শিক্ষক, সার্টিফিকেট, বয়স জালিয়াতি মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর পরিবর্তন, নম্বর বেশি দেখানো শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ এবং অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদে নিয়োগের মতো অনিয়মের ৩৫টি ঘটনা ধরা পড়েছে। প্রায় সবটিতেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশ, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এবং ইফার নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।

২০০৯-২০১৮ সাল পর্যন্ত ইফার ১০ বছরের কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা চালায় সিভিল অডিট অধিদফতর। এতে এ তথ্য বেরিয়ে আসে। নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রেই বেশি অনিয়মের ঘটনা দেখা যায়। বিচারিক কর্মকর্তা সামীম মোহাম্মদ আফজল ২০০৯ সাল থেকে ইফা মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ে অ্যাগ্রিড মিটিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত নিরীক্ষার খসড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও চাকরির বয়স না থাকা এবং কম যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম ও ভাষাশিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একজন পেশ ইমাম নিয়োগের ক্ষেত্রে খতিব হিসেবে অভিজ্ঞতার প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে ৫/০৩/২০০৩ সাল থেকে। অথচ তিনি দাওরায়ে হাদিস পাস করেছেন ২০০৫ সালে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পেশ ইমাম পদের জন্য প্রথম শ্রেণীর কামিল সমমান দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি দাওরায়ে হাদিস পাস করেছেন ২০০৫ সালে। তখন দাওরায়ে হাদিস কামিলের সমমান ছিল না। দাওরায়ে হাদিসকে কামিলের সমমান দেয়া হয়েছে ২০১৮ সালে। এই পদে নিয়োগের জন্য মুফাসসির পদে পাঁচ বছর চাকরি করার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়।

কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা সনদ নিয়োগপ্রাপ্ত ইমামের নেই। সিলেকশন কমিটির ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখের সভায় পেশ ইমাম পদটিকে টেকনিক্যাল কোটা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথচ এটি টেকনিক্যাল পদ নয়। এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারকের পরিপন্থী। পেশ ইমাম পদে আনোয়ারুল হকের নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স কম দেখানো হয়। তার বায়োডাটায় দাওরায়ে সনদপত্রে জন্মতারিখ ১৬/০৫/১৯৭৪, কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া বয়স তিন বছর কমিয়ে ১৬/০৫/১৯৭৭ দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া তার প্রাপ্ত নম্বর ৫০.১১। একই পদে অন্য আবেদনকারী ইলিয়াস হোসেনের প্রাপ্ত নম্বর ৫০.৪৪। অথচ আনোয়ারুল হককে প্রথম স্থান অধিকার দেখিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। একজন ইমামকে খতিব হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করার জন্য ২০০৩ সাল থেকে অভিজ্ঞতা দেখানো হয়েছে এবং তার দাওরায়ে হাদিস পাস সনদের একটি ফটোকপি নথিতে পাওয়া যায়, মূল সার্টিফিকেটের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ইফার চাকরি বিধিমালা-১৯৯৮ এর শর্ত পরিপালন না করেই এসব নিয়োগ দেয়া হয়। তবে ইফার পক্ষ থেকে বিধি অনুযায়ী নিয়োগের দাবি করা হয়। নিরীক্ষায় এই দাবি নাকচ করে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিয়োগকৃতদের বেতনভাতা বাবদ প্রদত্ত টাকা ফেরৎ নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

পূর্ববর্তি সংবাদশীতকাল :  মুমিনের জীবনে ভরা বসন্ত
পরবর্তি সংবাদনিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে যমুনা টিভির বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি: সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি