ইসলাম টাইমস ডেস্ক: পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সমন্বয়ের জন্য খুচরা গ্রাহকদের ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ বিতরণের মাসুল ২১ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
গতকাল রবিবার কারওয়ানবাজারে টিসিবি অডিটরিয়ামে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসির শুনানিতে এ প্রস্তাব তুলে ধরেন পিডিবির জিএম (বাণিজ্যিক কার্যক্রম) কাউসার আমীর আলী।
বর্তমানে প্রতিইউনিট বিদ্যুতের জন্য ৮৫ পয়সা হারে বিতরণ মাসুল আদায় করে পিডিবি। ২১ শতাংশ বা ২০ পয়সা বাড়ালে তা ১ টাকা ৫ পয়সা হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে প্রতিইউনিট বিদ্যুতের পাইকারিমূল্য ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে বিপিডিবি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগামী বছরজুড়ে ৮ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা সম্ভাব্য ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যেই বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায় পিডিবি।
পিডিবির প্রস্তাবনায় বলা হয়, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ও সঞ্চালন মাসুল (হুইলিং চার্জ) বাড়লে তা ‘পাস থ্রো’ পদ্ধতিতে সমন্বয় করতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের ডিমান্ড চার্জও বাড়াতে হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ বিতরণে ১ টাকা ৩১ পয়সা ব্যয় হয়েছিল বলে পিডিবির হিসাব। ২০২০ সালের জন্য বিতরণ ব্যয় ১ টাকা ১৮ পয়সা ধরা হয়, যা বিইআরসির হিসাবেও একই। তবে আয় হিসাবে অন্য খাত থেকে ইউনিটপ্রতি ১৩ পয়সা আসার হিসাব দিয়েছে পিডিবি। কিন্তু বিইআরসির হিসাবে তা ১৫ পয়সা, যা বিতরণ ব্যয় থেকে বাদ যাচ্ছে। সে হিসাবে দুপক্ষের মূল্যায়নের পার্থক্য ৩ পয়সা।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, ট্যারিফ সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ইউনিটমূল্য না বাড়িয়ে ডিমান্ড চার্জ বাড়ানো যেতে পারে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিম্নচাপ (এলটি) সংযোগের লোড ৫০ কিলোওয়াট থেকে বাড়িয়ে ৮০ কিলোওয়াটে উন্নীত করা হয়। এ ছাড়া বকেয়া বিলের ওপর এককালীন ৫ শতাংশ হারে বিলম্ব পরিশোধ মাসুল আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়।
শুনানিতে ভোক্তার অধিকার রক্ষায় নাগরিকদের সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘কেন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই সেটি শুনানিতে যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করি। কিন্তু বিইআরসি এসব যুক্তিকে আমলে নেয় না বলেই আমাদের আদালতে যেতে হয়।’
বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, মুঠোফোন গ্রাহক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও বিজিএমইএর প্রতিনিধি আনোয়ার হোসাইন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মিজানুর রহমান, রহমান মুরশেদ ও মাহমুদউল হক ভূঁইয়া শুনানি করেন।