বন্দিশালায় উইঘুর মুসলিমদের করুণ জীবন বৃত্তান্ত (ভিডিও)

তারিক মুজিব ।।

“এই জীবন থেকে আপনার মুক্তি নেই। এখানে কোনো স্বাধীনতা নেই। এখানে সবদিকেই ক্যামেরা। শৌচাগারেও ক্যামেরা বসানো। আমাদের প্রতিটি কাজ নিরীক্ষণ করা হয়।”

গুলজিরা নামে এক উইঘুর মুসলিম নারী এসব কথা বলেন। তিনি ১৫ মাস ধরে জিয়জিয়াং প্রদেশের এক বন্দিশালায় আটক। প্রায় এক মিলিয়ন উইঘুর মুসলিমকে এখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

চীন সরকার বলছে, এদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ফাঁস হয়ে যাওয়া চীনের সরকারি নথি বলছে ভিন্ন কথা। “মগজ ধোলাই করা হচ্ছে এসব ক্যাম্পে”।

চীনের কয়েদখানায় কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার মধ্যে হাজার হাজার উইঘুর মুসলিমের মগজ ধোলাই করার খবর ফাঁস হয়েছে। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) ‘দ্য চায়না ক্যাবলস’ নামে চীন সরকারের ৯ পাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি ফাঁস করেছে। যাতে চীনের জিংজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলমানদের মগজ ধোলই-এর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে।

চীনের পশ্চিমাঞ্চলে গত তিনবছরে একশোর মতো এসব ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যাতে প্রশিক্ষণের নামে ক্যাম্পে বন্দী বিভিন্ন উইঘুর মুসলিমের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

“তুমি তখনই বসতে পারবে যখন তারা তোমাকে বসতে বলবে। তাদের বলার এক মুহূর্ত আগেও ঘুমুতে যাওয়া যাবে না। কোনো মহিলা যদি দুই মিনিটের জন্য টয়লেটে যেতে চায় তাকে বলা হবে দ্রুত ফিরে এসো। অগত্যা যদি সামান্য দেরি হয়েই যায় মাথায় দেওয়া হবে ইলেকট্রিক শক। মাথায় আঘাত পাওয়ার পরও “ধন্যবাদ স্যার, আর হবে না” বলা নিয়ম।” বলেন আরেক উইঘুর নারী।

গুলজিরা বলেন, আমাদের প্রায়ই এ কথা শুনানো হয় যে, ধর্মই তোমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা তারা প্রতিদিন বলে।

‘মূলত, শিক্ষার নামে এরা আমাদের ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিতে চায়।’

 

পূর্ববর্তি সংবাদআর্জেন্টিনায় চার্চের স্কুলে বধির শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের দায়ে দুই যাজকরে জেল
পরবর্তি সংবাদমুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরীর ছেলে হাফেজ সাঈদের ইন্তেকাল