‘আরএসএস’ বেশ কিছু মসজিদকে মন্দির বানাতে চাইছে: ওয়াইসি

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও তাদের আদর্শিক পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) হাতে বেশ কিছু মসজিদের তালিকা আছে। তারা এগুলোকে মন্দিরে রূপান্তর করতে চাচ্ছে। খবর এনডিটিভি-র।

রোববার এক সমাবেশে তিনি আরও বলেন, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো মুসলমানদের ধোঁকা দিয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের রায় নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়ারও নিন্দা জানিয়েছেন এ রাজনীতিবিদ।

সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির মতো কথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ওয়াইসি।

এমপি ওয়াইস আরও বলেন, আজ মুসলমানরা কী দেখতে পাচ্ছেন? সেখানে একটি মসজিদ ছিল, কয়েকশ বছর ধরে, সেটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন সেখানে মন্দির নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জমিটি এখন রাম লালার অধিকারে চলে যাবে।

‘কোনো এক ব্যক্তি যদি আপনার বাড়ি ভেঙে ফেলেন, আপনি সালিশে গেলেন, কিন্তু বিচারক আপনার বাড়িটি তাকেই দিয়ে দিলেন, যিনি সেটি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। আর আপনাকে বিকল্প একখণ্ড ভূমি দিলেন। তখন আপনার কেমন লাগবে?’

হায়দরাবাদের এই এমপির প্রশ্ন হচ্ছে- যদি মসজিদটি অবৈধভাবেই স্থাপিত হয়ে থাকে, তা হলে এল কে আদভানিসহ অন্যদের কেন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। আর বৈধ জায়গায় হলে কেন সেই জমি তাকে দেয়া হলো।

বিচার না মানায় যারা তার সমালোচনা করেন, তাদের তুলাধোনা করলেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, রায়ের বিরোধিতা করার গণতান্ত্রিক অধিকার তার রয়েছে।

মসজিদ নির্মাণে বিকল্প পাঁচ একর জমির প্রস্তাব দিয়ে মুসলমানদের অপমানিত করা হয়েছে বলে মনে করেন মজলিস-ই-ইত্তেহাদুলের এ নেতা।

তিনি দাবি করেন, বাবরি মসজিদ আমাদের বৈধ অধিকার। আমরা ভূমির জন্য লড়াই করিনি। আমরা দান কিংবা অনুগ্রহ চাইনি। আমাদের ভিক্ষুক ভাববেন না। আমরা দেশের সম্মানিত নাগরিক।

মসজিদের পক্ষ হয়ে সুপ্রিমকোর্টে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। অশীতিপর আইনজীবী রাজীব দেওয়ান ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, রাজীব সাহেবকে ধন্যবাদ জানানোর মতো ভাষা আমার জানা নেই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- তিনি মামলাটি নিয়েছেন এবং কঠিন সময় লড়াই করে গেছেন।

বিজেপি ও সংঘ পরিবার যখন মসজিদের একটি তালিকা বানিয়েছে, তখন বাবরি মসজিদের জন্য লড়াই করে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, সংগঠন দুটি বলতে চাচ্ছে, তারা কোনো তালিকা করেনি। যদি না-ই করত, তবে কাশি ও মাথুরা মসজিদের মামলা কেন তারা প্রত্যাহার করছে না।

মুসলমানদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই আইনপ্রণেতা বলেন, এটি তাদের দেশ। তারা প্রথম শ্রেণির নাগরিক। সবাইকে নিয়মিত নামাজ আদায়ের অনুরোধ করে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে বলেন।

পূর্ববর্তি সংবাদইডেনে আবারও ছাত্রলীগ নেত্রীদের মারামারি, ১ জন হাসপাতালে
পরবর্তি সংবাদঅপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তুরিন আফরোজকে অপসারণ: আইনমন্ত্রী