প্রাচীন যুগের সীরাত রচনা-১ : প্রথমকালের কয়েকটি কিতাব

মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব ।।

প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়েই হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসা আছে। থাকা জরুরীও। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর তাঁর মহব্বতকে আবশ্যক করেছেন। তার অনুসরণকে করেছেন বাধ্যতামূলক। সেই মহব্বত ও অনুসরণ আমাদের কল্যাণার্থেই। আমাদের জীবনকে সুন্দর করার উদ্দেশ্যেই। তিনি যে পুরো মানবজাতির সর্বোত্তম ব্যক্তি। তার আদর্শ ও জীবন পদ্ধতি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদর্শ। সর্বোৎকৃষ্ট জীবন পদ্ধতি। কারণ স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে সরাসরি দিক নির্দেশ করেছেন। তাঁকে সর্বোত্তম পন্থায় জীবনযাপনের তাওফীক দিয়েছেন। এরপর বলেছেন-لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ”। ( সূরা আহযাব)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই জীবন পদ্ধতি জানার সহজ ও সুন্দর একটি মাধ্যম হলো সীরাত পাঠ। পাঠক্ষম প্রত্যেক মুমিনের জন্যই নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সীরাতগ্রন্থ পাঠ করা উচিত। সীরাত পাঠের মধ্য দিয়ে নবীজীবন সম্পর্কে জানা ও সে অনুযায়ী নিজের জীবনকে সাজানোর চেষ্টা করা উচিত।

ইসলামের শুরু যুগ থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহু লেখক, বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য সীরাতগ্রন্থ লিখেছেন। লিখেছ চলেছেন।  আমরা যদি সীরাত সংকলনের প্রথম যুগ এবং প্রথম কিতাবগুলো সম্পর্কে জানতে চাই, তাহলে কয়েকটি কথা মনে রাখতে হবে।

সীরাত বা নবীজীবনী মূলত হাদীসেরই একটি অধ্যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শৈশব, কৈশোর, যৌবন, নবুওয়াতপ্রাপ্তি এবং নবুওয়াত পরবর্তী জীবনের সকল অবস্থার বিবরণ সীরাতের আলোচ্য বিষয়। যা হাদীসেরই উল্লেখযোগ্য কিছু অধ্যায়। তাই সীরাত সংকলনের সাথে হাদীস সংকলনের প্রসঙ্গটি খুব সুন্দরভাবে যুক্ত। অতএব সীরাত সংকলনের ইতিহাস মানে হাদীস সংকলনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিহাস।

তবে ইতিহাসবেত্তা কয়েকজন মনীষী হাদীসের কিতাব ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে সীরাতগ্রন্থ রচনা করেছেন। ইতিহাসের কিতাব দেখলে প্রথমদিককার কয়েকজন সীরাতগ্রন্থ প্রণেতাদের নাম পাওয়া যায় এমন-

হযরত উরওয়া ইবনে যুবায়ের রাযি. (৯২ হি.)

হযরত আবান ইবনে উসমান রাযি. (১০৫ হি.)

হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বিহ রহ. (১১০ হি.)

হযরত শুরাহবীল ইবনে সাদ রহ. (১২৩ হি.)

হযরত ইবনে শিহাব যুহরী রহ. (১২৪ হি.)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর ইবন হাযম রহ. (১৩৫ হি.)

এঁদের রচিত গ্রন্থাবলীর প্রায় সবই কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। তবে সেগুলোর উদ্ধৃতিতে বিভিন্ন তথ্য সংকলিত হয়েছে পরবর্তীদের কিতাবে। এক্ষেত্রে ইমাম তাবারী রহ.-এর কিতাব ‘আত -তারীখ’ উল্লেখযোগ্য। তাতে ঐ কিতাবগুলোর বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।

তাঁদের পর ইতিহাস ও সীরাত রচয়িতাদের আরেকটি দল আবির্ভূত হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন-

হযরত মূসা ইবনে উকবা রহ. (১৪১ হি.), মুয়াম্মার ইবনে রাশিদ (১৫০ হি.), মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক রহ. (১৫২ হি.) প্রমুখ মনীষীগণ।

 

পূর্ববর্তি সংবাদআযাদি মার্চ : পাকিস্তানে সরকার এবং বিরোধীপক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থান বহাল
পরবর্তি সংবাদএই সরকার সচেতনভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে: মির্জা ফখরুল