চট্টগ্রামের দারুল মা’আরিফে মাওলানা আবদুল মালেক যা বললেন

আবদুল্লাহ মারুফ ।। দারুল মা’আরিফ থেকে

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়ায় আজ রবিবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা মাহফিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মারকাজুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার আমীনুত তা’লীম মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক।

মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি আব্দুল মালেক সাহেব বলেনㅡ কেবল কিতাবি ইস্তিদাদ-ই যথেষ্ট নয়, একজন তালিবে ইলমের জন্য ‘দিলে দর্দমান্দ, ফিকরে আরজুমান্দ এবং জবানে হুঁশমান্দ’ㅡ এই তিনটি গুণ অর্জন করা একান্ত জরুরী। অন্তরে দ্বীনের জন্য দরদ, ফিকির না থাকলে অর্জিত ইলমের গলত ইস্তেমাল হবে, বাতিল এবং ইসলামের শত্রুদের গবেষণাকর্মে সহযোগী হবে তার ইলম; যা কখনও কাম্য নয়। সেই সাথে ইলমের সঙ্গে জিকির, অর্থাৎ তাকওয়া পরহেজগারির সন্নিবেশ ঘটানো উলামা-তালাবার জন্য ফরজ বিধান।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একবার হযরত আবরারুল হক রহ. বাংলাদেশ সফরে এসে গাড়িতে করে নূরীয়া মাদরাসায় যাচ্ছিলেন। পথে ট্রাফিকমোড়ে লাল বাতি জ্বলে ওঠার পরও ড্রাইভার গাড়ি না থামিয়ে এগোতে থাকলে তিনি ড্রাইভারকে থামতে বলেন, তখন ড্রাইভার বলেন, হুজুর পুলিশ নেই! এটা শুনে হারদূয়ী রহ. ঠাণ্ডা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, ইস লিয়েই ইলমকে সাত্ তাকওয়া জরুরি হ্যায়। এজন্যই ইলমের সঙ্গে তাকওয়া জরুরি, লালবাতি জ্বাললে গাড়ি থামাতে হয় ড্রাইভারের ইলম (জানা) আছে, কিন্তু তাকওয়া না থাকার কারণে তিনি আইন লঙ্ঘন করলেন। এজন্য ইলমের সঙ্গে তাকওয়া অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন, আমরা আকাবির ও আসলাফের মেজাজ বোঝার চেষ্টা করবো। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলবো। কখনই সালফ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবো না, নিজেকে নিজের সলফ থেকে বিচ্ছিন্ন করা এমন একটা ফেতনা, যা শত ফেতনার বুনিয়াদ। শুধু কিতাবি ইস্তাদাদ যথেষ্ট নয়, ফন্নি ইস্তিদাদ এবং আদব আখলাক লাগবে। কিতাবি ইস্তিদাদ দিয়েই কাজ হবে না, এর হাজারটা নজির আমাদের সামনে রয়েছে, কিতাবের ইস্তিদাদ ছিলো ভালো কিন্তু আদব ছিলো না, এখন খুঁজেও পাওয়া যায় না তাকে। আর একটু কম বুঝতো কিতাবাদি, কিন্তু মুয়াদ্দব ছিলো, এখন এমন ছেলে বড় বড় জায়গায় সসম্মানে কাজ করে যাচ্ছে। তাই ইলমের সঙ্গে তাওয়াজুও লাগবে।

তালিবে ইলমের কাছে আমার দরখাস্ত, উস্তাযের থেকে ইলম শিখি, আমল শিখি, তাওয়াজু শিখি এবং তাকওয়া শিখি।

মুফতি আব্দুল মালেক সাহেব তাঁর বয়ানের শুরুতে আল্লামা সু্লতান যওক নদভী সাহেবের ব্যক্তিত্ব তুলে ধরে তাঁর ইলম ও আমলের কথা বর্ণনা করে মহীরুহ এই আলেমের জন্য দুআ করেন। তার আগে, নামাজের পর্বে অসুস্থ আল্লামা যওক সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে মাদরাসাসংলগ্ন হুজুরের বাসায় যান। দেখা করেন। কথা বলেন।

উল্লেখ্য, মুফতি আব্দুল মালেক আল্লামা মুহাম্মদ সু্লতান যওক নদভী থেকে হাদীসের ইযাযত নিয়েছেন আরও বছর কয়েক আগে, আজকে দারুল মা’আরিফে মুফতি সাহেবের আগমনের কথা না থাকলেও চট্টগ্রামে এসে শায়খকে দেখতে ছুটে এসেছেন জামেয়া প্রাঙ্গণে। জামেয়ার সর্বস্তরের ছাত্র-শিক্ষক উষ্ণ অভ্যর্থনায় হুজুরকে বরণ করে নেন।

পূর্ববর্তি সংবাদইজতেমার আগে আলমী শুরার সাথীদের দেশব্যাপী জোড়ের তারিখ ঘোষণা
পরবর্তি সংবাদখোকাকে দেশে ফেরাতে সহায়তার আশ্বাস দিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী