এবার না’গঞ্জে নারী পিয়ন-কৃষি কর্মকর্তার গোপন ভিডিও ফাঁস

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: কর্মক্ষেত্রে অনৈতিকতার সয়লাব যেন বেড়েই চলেছে। জামালপুরের সাবেক ডিসির নারী কেলেংকারীর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নারায়ণগঞ্জে বন্দরে সরকারি অফিসে এক কর্মকর্তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ফাঁস হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে ওই অফিসের এক নারী অফিস সহায়কের (পিয়ন) ঘনিষ্ঠ অবস্থার সিসিটিভির ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরই জয়নাল আবেদীনকে অন্যত্র বদলি করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর বন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পত্র নং ১২.১৮.৮৭০৬.০৩৯.০৪১.১২/৪৬৪ নং স্বারকে জয়নালের অনৈক কর্মকাণ্ডের কথা কিছুটা উল্লেখ করে জেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

বন্দর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার জানান, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এরইমধ্যে জয়নাল আবেদীনকে বদলি করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা স্বীকার করে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। শয়তানের প্ররোচনায় আমি ভুল করেছি। আমি এ ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’

ওই নারী পিয়ন বলেন, ‘জয়নাল সাহেব আমার ঊর্ধ্বতন অফিসার। তিনি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করেছেন। চাকরির ভয়ে আমি চুপ ছিলাম।’

ফাঁস হওয়া সিটিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ৮ অক্টোবর সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন তার রুমে বসে অফিসের নারী পিয়নের সঙ্গে কথা বলছেন। এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে তিনি জোর করে ওই নারীর গায়ে হাত দিচ্ছেন। ওই নারী টেনে তার হাত সরিয়ে দেন। পরে তিনি (ওই নারী) বাইরে চলে যান।

তিন-চার মিনিট পর জয়নাল আবেদীন আবার ওই নারীকে রুমে নিয়ে আসেন এবং চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। এরপর ওই নারী কর্মী আবার রুম থেকে বের হয়ে যান। তার দুই মিনিট পর জয়নাল আবেদীনও রুম থেকে বের হয়ে যান। দুই তিন মিনিট পর আবার জয়নাল আবেদীন ও ওই নারী কর্মী রুমে প্রবেশ করেন। এর পর তাদের ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখা যায়। প্রায় ১৪ মিনিটের ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

বন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা সুলতানা জানান, ‘আমি সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তার নির্দেশে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী হাবিবুর রহমান জানান, ‘এরই মধ্যে জয়নালকে বন্দর উপজেলা থেকে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার নারী চাইলে ফৌজদারি মামলা করতে পারেন।

বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের নৈতিক স্খলন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অফিসের নারী পিয়নও তার কাছে নিরাপদ নয়। এই কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এরকম করতে না পারে।

পূর্ববর্তি সংবাদদুই সপ্তাহর আন্দোলনে পদত্যাগ করলেন লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী হারিরি
পরবর্তি সংবাদউত্তপ্ত কাশ্মীরে আবারও হামলা, নিহত ৫ ভারতীয় নাগরিক