মুফতী হাতেম সাহেব: নিভৃতচারী একজন বিরল জ্ঞান-সাধক

মোহাম্মদ আদেল শরীফ ।।

মুফতী হাতেম সাহেব দা.বা.। আশি-ঊর্ধ্ব একজন প্রবীণ আলিমে দ্বীন, হযরত মাদানী রহ.-এর প্রিয় শাগরিদ, হযরত হাফেজ্জী হুযূর রহ.-এর অন্যতম খলীফা, আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেবের হামসবক, বড় বড় অনেক বুযুর্গানে দীনের সোহবত ও ইজাযতপ্রাপ্ত।

এই মহামনীষীর পরিচয় জানার পর থেকেই সাক্ষাৎ ও মোলাকাতের সুযোগ খুঁজছিলাম। ‘নতুন আত্মীয়তার’ সুবাদে এক ছুটিতে পরিবারসহ বেড়াতে গেলাম হুযূরের বাসায়। সোনার গাঁ থানার বারদী ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী গ্রাম। সবুজ-শ্যামল আর অপরূপ প্রকৃতিতে ঘেরা নীরব নিভৃত এক পল্লী। এখানেই হুযূরের নিবাস। আমাদের আগমনের খবর শুনে এত অসুস্থতা সত্ত্বেও হুযূর বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। হালপুরসি করেছেন।

সকালে নামায পড়তে গেলাম হুযূরের হাতেগড়া মাদরাসা-মসজিদে। হুযূরকে দেখি আমাদেরও অনেক আগে এসে ইমাম সাহেবের ডান পাশে বসে আছেন। এমন বৃদ্ধ বয়সে দাঁড়িয়েই নামায আদায় করলেন। নামাযের পর অযিফা আদায় করে ধীরে ধীরে হেঁটে মাদরাসায় নিজ কামরায় গেলেন। আলমারী থেকে কুরআন শরীফ নিয়ে কেবলামুখী হয়ে বসে তিলাওয়াত করতে লাগলেন। কিছুক্ষণ দূর থেকে হুযূরের তিলাওয়াত করা দেখলাম। এই মুহূর্তে ভেতরে যাওয়া ঠিক হবে না। তাই ঘুরে ঘুরে পুরো মাদরাসা দেখলাম।

জামিয়া আরাবিয়া ইসলামিয়া। তিন তলাবিশিষ্ট দু’টি ভবন, দু’টি লম্বা টিনশেড। সামনে বিস্তৃত খোলা মাঠ। নানা জাতের সারি সারি বৃক্ষ। চারদিকে ফসলি জমিতে ছড়িয়ে আছে সবুজের শামিয়ানা। এমন নিভৃত পল্লীতে এত বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং দাওরায়ে হাদীসের মানে উত্তীর্ণ করা সীমাহীন ত্যাগ ও কুরবানী, সর্বোপরি আল্লাহর তাওফীক ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়।

হুযূরের পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মাঝে সবার ছোট হলেন, আমার শ্রদ্ধেয় ভায়রাভাই হাফেয মাওলানা শামীমুল ইসলাম। তিনি এই মাদরাসার শিক্ষাসচিব। বারদী বাজার মারকাজ মসজিদের ইমাম ও খতীব।  সকাল সাড়ে নয়টা-দশটার দিকে এসে বললেন, ‘আদিল, আব্বা তোমাকে ডেকেছেন।’ ছুটে এলাম হুযূরের কামরায়। হুযূর বসতে বললেন। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কোথায় কী কী কিতাব যেন পড়ান?’ শুনে বললেন, ‘মন দিয়ে পড়াবেন। কোনো কিতাবকেই ছোট মনে করবেন না। দরসে যাবার আগে ভালোমত মোতালায়া করে নিবেন। কীভাবে পড়ালে কঠিন মাসআলাগুলো ছাত্ররা সহজে বুঝবে, আগেই তা চিন্তা- ফিকির করে সাজিয়ে নিবেন। তারা সবক ইয়াদ করে কিনা, পিছনের সবক পড়ে কিনা-তদারকি করবেন।

“বর্তমানে ছাত্রদের তালীম-তারবিয়াতের পিছনে উস্তাদদের অনেক নেগরানী প্রয়োজন। আগে তো ওরা নিজেরাই মোতালায়া করে, তাকরার করে সবক ভালোমত ইয়াদ করতো। তাদের মন-মেযাজ সবসময় লেখাপড়াতেই নিবিষ্ট থাকতো। এখন যেহেতু নানামুখী ফিকির ও শোগলে তারা জড়িয়ে পড়ছে- যেগুলো তাদের লেখাপড়ায় উন্নতি ও কামিয়াবির প্রতিবন্ধক- তাই নেগরানীরও প্রয়োজন রয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি।’

এরপর হুযূর ছাত্রযামানায় কীভাবে লেখাপড়া করতেন, উস্তাদদের সাথে সম্পর্ক কেমন ছিলো, দেওবন্দে কীভাবে গিয়েছেন, দাখেলা নিয়েছেন, হযরত মাদানী রহ.-এর দরস থেকে কীভাবে ইস্তেফাদা করেছেন- খুব আবেগভরা কণ্ঠে এসবের স্মৃতিচারণ করলেন।

সর্বপ্রথম হুযূর ছাত্র-যামানায় কেমন লেখাপড়া করতেন-এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে বললেন,

‘আমি নোয়াখালীর উত্তর হাতিয়ায় অবস্থিত আলেকজান্ডার চরকলাকোপা মাদরাসায় মীযান জামাত থেকে মেশকাত পর্যন্ত দীর্ঘ নয়বছর লেখাপড়া করি। এই নয়বছর প্রতিটি পরীক্ষায় আলহামদু লিল্লাহ আমি ১ম হয়েছি। প্রচণ্ড অসুস্থতা ব্যতিত কোনদিন দরসে অনুপস্থিত থাকিনি। ফলে আমার নয়বছরের নয়টি ‘উপস্থিতি-পুরস্কার’ রয়েছে। আমি খুব মেহনত করে লেখাপড়া করেছি। কখনো একটা মুহূর্তও গল্প-গুজব করে কাটাইনি।

‘আমার স্পষ্ট মনে আছে, মাদরাসা থেকে জায়গীর বাড়ি ছিলো চার থেকে সাড়ে চার মাইল দূরে। মাদরাসা থেকে প্রতিদিন আছর পড়ে রওয়ানা হতাম। মাগরিব সেখানে গিয়ে পড়তাম। মাগরিবের পর যদি খাবার দিয়ে যেত, কিছুটা খেয়ে সব কিতাবের সবক হাশিয়াসহ পূর্ণতৃপ্তির সাথে বুঝার চেষ্টা করতাম। যখন আশ্বস্ত হতাম, কিতাবের সবকগুলো ভালোমত বুঝেছি, তখন বাকি খাবার খেতাম। কোনো কোনো সময় এক বসাতেই রাত-ভোর হয়ে যেতো। নাহু, সরফ ও আদবের কিতাবগুলোর ইবারত সাধারণত মাগরিবের পরেই মুখস্থ করে ফেলতাম। সকালে তিলাওয়াতের পর সে কিতাবগুলো শুরু থেকে মুখস্থ পড়তাম। আর হেদায়া, মোল্লা হাসান, মেশকাত ইত্যাদি যেগুলোর ইবারত মুখস্থ হতে সময় লাগতো, সেগুলো সামনে নিয়ে কী কী মাসআলা আছে, তা স্মরণ করার চেষ্টা করতাম। প্রয়োজন হলে কিতাব খুলে দেখে নিতাম। মাদরাসায় যাওয়ার পথে আবার সবগুলো কিতাব শুরু থেকে পড়তে পড়তে যেতাম। এটাই ছিলো আমার প্রতিদিনের ‘নেযামুল আওকাত’। এতে করে পরীক্ষায় ১ম হতে আমার বেগ পেতে হতো না।

আমার মনে আছে, দেওবন্দে দাখেলা নেয়ার সময় ‘মুমতাহিন’ মাঈবুজীর ইবারত জিজ্ঞাসা করেছেন, আমি মুখস্থ শুনিয়ে দিয়েছি। এরপর মাকামাতে হারীরী থেকে প্রশ্ন করেছেন, তাও মুখস্থ শুনিয়েছি। তিনি খুব বিস্মিত হয়েছিলেন। দাখেলা নম্বর পেয়ে দাওরায়ে হাদীসে ভর্তি হলাম। সবক শুরু হলো। হযরত মাদানী রহ. বুখারী শরীফ পড়ান। আহ, হযরতের কী চমৎকার তাকরীর! জটিল মাসআলাগুলো কত সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন! দৃশ্যতঃ পরস্পর ‘মুতাযাদ’ হাদীসগুলোর মাঝে কী সুন্দর ‘তাতবীক’ দেন! হযরতের সেই তাকরীরগুলো ‘মুজাহিদ’-নামক এক সাথী হুবহু লিখে ফেলতো। এতে সবকের পরে সবাই তার কাছে ভিড় জমাতো। আমার খুব কষ্ট লাগতো, কেন আমি লিখতে পারি না? মনটা খুবই খারাপ। সবকে কোনভাবেই মন বসছে না।

‘তখন দেওবন্দের প্রবীণ উস্তাদ মাও. আব্দুল আহাদ সাহেবের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলাম, এ বছর ‘ফুনূনাত’ বিভাগে ভর্তি হয়ে মাঈবুজী, মোল্লা হাসান, হিদায়া আখেরাইন আবার পড়বো। দাওরা পড়বো আগামী বছর। তবে শুধু মাদানী রহ.-এর সবকে বসবো। কারণ তিনি যদি দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে যান!

তাই করলাম। দরসে বসে মোল্লা হাসান ও মাঈবুজীর তাকরীর লিখে রাখতাম। এভাবে আমার দ্রুত লেখার অভ্যাস হয়ে গেলো। আবার মোল্লা হাসান ও মাঈবুজীর দু’টি শরাহও লেখা হলো। কিন্তু শরাহদু’টি কে যে নিয়ে গেলো, আজ পর্যন্ত তার সন্ধান পেলাম না! আজ থাকলে তা অনেক বড় সম্পদ হতো। মোল্লা হাসান মাও. আব্দুল আহাদ সাহেব এবং মাঈবুজী মাও. হাসান সাহেব পড়াতেন। পরীক্ষায় হাসান সাহেব আমাকে ৫০ থেকে ৫৩ নম্বর দিয়েছিলেন। তিনি খুব সুন্দর তকরীর করতেন। বার্ষিক পরীক্ষায় ফুনূনাত বিভাগে ১ম হয়ে হযরত মাদানী রহ. এর হাতে বিশেষ পুরস্কার গ্রহণ করলাম। সেই সময় আমার যে কী অনুভূতি হয়েছিলো-বলে বুঝাতে পারবো না! তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, ‘দেখো হিন্দুস্তানী, বাঙ্গালী ফালসাফা মেঁ নাম্বারে আউয়াল হাঁয়, তুম কো শারম নাহী আতী, ডুবকে মরো হিন্দুস্তানী!’

‘পরের বছর দাওরার কিতাবগুলো পরম আনন্দের সাথে পড়লাম। হযরত মাদানী রহ.- এর বুখারী ও তিরমিযি শরীফের তাকরীর হুবহু লিখে রাখতে চেষ্টা করেছি। সেইসাথে আবু দাউদের তাকরীরও লিখেছি। যা আমার কাছে এখনো সংরক্ষিত আছে। যার বরকতেই আজ বুখারী শরীফ পড়ানোর হিম্মত করছি’।

‘আল্লামা আহমদ শফী ছাহেবও সে বছর দাওরা পড়েছেন। তিনি সম্ভবত মসজিদে থাকতেন। আমি মাও. আব্দুল আহাদ সাহেবের বাড়ীতে থাকতাম। দু‘জনই খুব মেহনত করতাম। শায়খের দরসে সামনে বসতাম। আলহামদু লিল্লাহ শায়খের কোনো দরসই আমাদের ছুটেনি’।

‘আমি যেখানেই পড়েছি, আসাতেযায়ে কেরামের নেক নযর ও দোয়া লাভে ধন্য হয়েছি। কলাকোপায় দীর্ঘ নয় বছর পড়েছি, সকল উস্তাদ আমাকে মুহাব্বত করতেন। মাদরাসার মুহতামিম মাও. ছাইদুল হক সাহেব রহ. তো আমাকে ছেলের মত জানতেন। তিনি ছিলেন আমার মুরব্বী। বিদায়ের দিন কান্নায় আমি ছাত্র-উস্তাদ কারো সামনেই কোনো কথা বলতে পারছিলাম না। তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘ছাত্রদের মায়া আর উস্তাদদের আদর তোকে পাগল করে ফেলেছে। এখানে যেমন সবাই তোকে মুহব্বত করতো, তুই যেখানেই যাবি, সেখানকার উস্তাদ-ছাত্র সবাই তোকে মুহাব্বত করবে’।

‘হুযুরের পরামর্শেই আমি দেওবন্দ গিয়েছি। সেখানে গিয়ে তাই দেখলাম। উস্তাদ-ছাত্র সবাই আমাকে খুব মুহাব্বত করে। মাও. আব্দুল আহাদ সাহেব ছিলেন আমার উস্তাদের সাথী। তিনি নিজ বাড়ীতে আমার লেখাপড়ার জন্য একটি কামরা খালি করে দিয়েছিলেন। তিনিও ছেলের মতো আমাকে মুহাব্বত করতেন। ভালো কোনো জিনিস আমাকে না দিয়ে খেতেন না। আহ! এমন শফীক উস্তাদদের কথা আমি কোনোদিন ভুলতে পারবো না। ছাত্রদের তাঁরা সীমাহীন আদর করতেন। আমার উস্তাদদের সবাই তো চলে গেছেন। আমারও যাবার সময় হয়েছে। আল্লাহ যেন আমার খাতেমা বিল খাইর করেন। আল্লাহ যেন সবাইকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন, আমীন’।

‘দেশে এসে উস্তাদদের সোহবতে কলাকোপায় একবছর ছিলাম। পরে আব্বা-আম্মা ও এলাকাবাসীর অনুরোধে বাড়ীতে এসে (১৯৫৮ঈ.) একটি মাদরাসা কায়েম করি। মাদরাসা প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর একদিন লালবাগ জামিয়ায় ছদর সাহেব হুযূরের সাথে মোলাকাত করতে যাই। তিনি আমাকে তখন লালবাগ জামেয়ার প্রধান মুফতী এবং বাইতুল মুকাররমের খতীব হওয়ার প্রস্তাব দিলেন। বললাম, হুযূর দুইবছর হলো গ্রামে মাদ্ধসঢ়;রাসা করেছি। এখন কী করবো? তিনি বললেন, যোগ্য একজনকে বসিয়ে দিন। আমি বাড়ীতে এসে আব্বা-আম্মার সাথে পরামর্শ করলাম। আমার মা কোনোভাবেই রাজী হলেন না। বললেন, ‘এত বছর বাইরে ছিলি, এখন আর বাইরে থাকতে দিবো না। তোকে দেখে আমার চোখ জুড়াবো।’ এলাকাবাসীও বললো, ‘আপনি গেলে মাদরাসার কী দশা হবে? তাহলে কেন মাদরাসা করলেন?’

‘আমাকে নিয়ে যেতে ছদর সাহেব হুযূর এক মাওলানাকে পাঠালেন। তাতেও কাজ হলো না। আব্বা-আম্মাকে বুঝানোর জন্য ছদর সাহেব নিজেই এলেন। তিনি আব্বা-আম্মার কথা শুনে এবং মাদরাসা দেখে বললেন, “মাওলানা, লালবাগে বুখারী পড়ানো আর এখানে কায়দায়ে বোগদাদী পড়ানো- ছাওয়াব তো এখানেই বেশি। আপনি এখানেই থেকে যান। এখানে আপনার প্রয়োজন আছে। আল্লাহ বরকত দিবেন”। এরপর থেকে আর কোথাও যাইনি। সারাটা জীবন এখানেই কাটিয়ে দিলাম। তিলে তিলে মাদরাসাটি গড়ে তুললাম…।

মুফতী হাতেম সাহেব হুযূর এভাবেই বলে চললেন অতীতের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া তাঁর সুখ- স্মৃতির আখ্যান, যা সবিস্তারে তুলে ধরলে লেখাটি অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে। সর্বশেষ যে কথাটি বললেন, ‘এখনকার ছাত্রদের অবস্থা দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়। তারা আরবী-উর্দু-ফার্সী কোনোটাই ভালোমত শিখে না, তাই পড়তে পারে না। বলতে পারে না। বর্তমান নেসাবে তা‘লীমে কিতাব কত কম, তবুও অনেকে শরাহ ছাড়া কিতাব পড়তেই পারে না। সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে, নিচের জামাতগুলোর ছাত্রদের অবস্থা দেখে। দরসের বাইরে ওরা মেহনতই করতে চায় না। অথচ উপরের কিতাব বুঝার জন্য প্রথমিক কিতাবগুলো ভালোমত পড়া শর্ত।

অরেকটা সমস্যা হলো, মোবাইল। ছোট ছোট ছাত্রদেরকে পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করতে দেখা যায়। মাদরাসার মুনতাযিমগণের বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা দরকার। ছাত্রদের পিছনে উস্তাদদের অনেক বেশি মেহনত করা দরকার।

লেখক: আলেম শিক্ষক, জামিয়াতু বিলাল বিন রাবাহ (রা.) আল ইসলামিয়াহ

 

পূর্ববর্তি সংবাদচট্টগ্রামে মেয়র নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
পরবর্তি সংবাদওবায়দুল কাদের সাক্ষরিত চিঠিতেই আ. লীগের উপদেষ্টা হলেন জয়নাল হাজারী