ভোলা হত্যাকাণ্ড: কেমন আছেন আহত এবং নিহতদের পরিবার

তারিক মুজিব ।।

ভোলার বুরহানুদ্দিনে রাসূলকে অবমাননার প্রতিবাদে তাওহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেন চারজন নবীপ্রেমিক। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মুসুল্লি। আহত কয়েকজনের অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানা গেছে।

ভোলা হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং আহত নিহতদের খোঁজ নেওয়ার জন্য বুরহানুদ্দিন সফর করের তরুণ সেবক আলেম মাওলানা ইমরান হুসাইন হাবিবী।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, নিহতদের পরিবারে স্বজন হারানোর বেদনা থাকলেও কোনো হাহাকার নেই। প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ থাকলেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইজ্জত রক্ষার আন্দোলনে নিজের সন্তান শহিদ হয়েছেন বলে ছেলে হারানোর বেদনায় তিনি কাতর নন বলে জানিয়েছেন এক পিতা। নিহত পরিবারের এক সদস্য নিজেকে শহিদের স্বজন বলে গর্বও করছেন বলে জানা গেছে।

তবে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ নিহত পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ কেন নির্বিচারে তাওহিদী জনতার উপর গুলি চালালো এর তদন্ত সাপেক্ষ বিচার দাবি করেন তারা। পাশাপাশি যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার যথাযথ বিহিত চান শহিদ পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে ঘটনায় আহতদের খোঁজ নিতে ভোলা- বুরহানুদ্দিনের হাসপাতালগুলোতে গিয়েছেন মোমেনশাহীর আলেমদের সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামার সদস্যরা। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালে গুরুতর আহত বেশ কয়েকজন রোগি আছেন। পেটের ভেতরে গুলি প্রবেশ করা এবং মাথায় প্রচণ্ডরকম আঘাতপ্রাপ্ত রোগিও আছেন। তাদের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভোলার পরিস্থিতি বর্তমানে বেশ থমথমে। গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। আহত অনেকেও গ্রেফতারের ভয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না। গ্রেফতার আতঙ্কে আহতদের সহযোগিতা এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না স্থানীয় দায়িত্বশীলদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুরহানুদ্দিনের এক মসজিদের ইমাম জানান, ঘটানার পর থেকে রাস্তাঘাটে পুলিশ এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কয়েকজন একসাথে হলেই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই আহতদের পুরোপুরি খোঁজ-খবর নেওয়া যাচ্ছে না।

ইত্তেফাকুল উলামার সাথে ভোলায় সফর করে আসা ইমরান হাবিবী জানান, ভোলার হাসপাতালে চিকিৎসার মান তত উন্নত নয়। তাছাড়া চিকিৎসাকর্মীদেরও খুব আন্তরিক দেখা যায়নি। তাই গুরুতর আহতদের উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাদের বিভাগীয় শহর বরিশাল বা ঢাকায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা উচিত। এ ব্যাপারে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের উদ্যোগ প্রয়োজন।

বুরহানুদ্দিনে সফর করে আসা এক তরুণ আলেম বলেন, ধর্মীয় সামাজিক ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের পাশে দাঁড়ানো আলেমদের অবশ্য কর্তব্য। তাওহিদী জনতা যখন জানবে, আন্দোলন পরবর্তী সময়েও দায়িত্বশীলরা তাদের পাশে থাকবেন তখন তাদের মাঝে আন্দোলনে যোগ দানের স্বতস্ফুর্ততা আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করেন এই আলেম।

পূর্ববর্তি সংবাদডিবি পরিচয়ে কলরব শিল্পী বদরুজ্জামানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
পরবর্তি সংবাদ১৬ মাস কারাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরলো ৪ কিশোর