এনআরসির ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ আছে : শেখ হাসিনাকে মোদি

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ভারতের আসাম রাজ্যের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উদ্বেগের পুনরাবৃত্তি করলেও বিষয়টি তত গুরুত্বের সাথে নেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি।  শনিবার দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ঢাকার এ উদ্বেগের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু উত্তরে মোদি বলেছেন, নাগরিক তালিকা একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি দেখবো। দিল্লি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার।.

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানেও এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ে এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে জানান মোদি। বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাই এ ধরনের ইস্যু নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই।’

এর ১০ দিনের মাথায় শনিবার আবারও নরেন্দ্র মোদি-র কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্য ওয়্যার-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের কর্মকর্তারাই শনিবারের শীর্ষ বৈঠকে এনআরসি নিয়ে আলাপের বিষয়টি তাদের নিশ্চিত করেছেন।

২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত ভারতের আসাম রাজ্যের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দা। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির ইশতেহারে অন্যতম ইস্যু ছিল এই নাগরিক তালিকা চূড়ান্ত করা। এ বছরের গোড়ার দিকে কথিত অনুপ্রবেশকারীদের (বাংলাভাষী মুসলিম) ‘উইপোকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন বিজেপি নেতা ও ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার মাটিতে উইপোকার মতো। বিজেপি সরকার তাদের এক এক করে তুলে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে। অমিত শাহ তার বক্তব্যে অবৈধ মুসলিম অভিবাসী বলতে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে ইঙ্গিত করেন। তবে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি বিষয়টিকে আদালতের নির্দেশনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ আসামের নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তোলেন ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের সমন্বয়কারী ও আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের বন্ধু এবং তারা আমাদের সহায়তা করে আসছে। আমরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে উপস্থাপন করলে তারা বরাবরই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই সংখ্যাটি বেশি বড় না, তবে এখন আমরা তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’ হেমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্তব্যের বিষয়ে ইতোপূর্বে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন-এর সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এনআরসির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আবারও বলছি, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’

সূত্র: দ্য ওয়্যার, নিউজ ১৮।

পূর্ববর্তি সংবাদ‘কাশ্মীরে কিছু লুকানোর না থাকলে, সেখানে ঢুকতে দিতে ভয় কেন?’
পরবর্তি সংবাদঠাকুর শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করলেন প্রধানমন্ত্রী