ভারত পেঁয়াজ না দেয়ায় সুযোগ নিচ্ছে মিয়ানমার

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: দেশে পেঁয়াজের সঙ্কট নিরসনে প্রতিদিনই মিয়ানমারের পেঁয়াজভর্তি ট্রলার ভিড়ছে টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে। মিয়ানমার থেকে দফায় দফায় পেঁয়াজভর্তি ট্রলার নোঙর করছে টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে। গত বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা ৫৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া শ্রমিকের অভাবে খালাসের অপেক্ষায় নাফ নদে ভাসছে ২১ হাজার ৭৫ বস্তার (৮৪৩ মেট্রিক টন) কয়েকটি পেঁয়াজের ট্রলার।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ৫৬৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছিল। টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন বলেন, ‘টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ৫৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজভর্তি ৩৭ টি ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকায় রওনা দিয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে আসা ৮৪৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ খালাসের অপক্ষোয় রয়েছে।’

এ দিকে আমদানিকারকেরা বলছেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার সুযোগে মিয়ানমারও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তার ওপর পেঁয়াজ আমদানি শুল্কমুক্ত হলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে। তবে এ ব্যাপারে কোনো উত্তর দেয়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে মিয়ানমার থেকে আরো পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। তবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে কত খরচ পড়ছে তার সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না আমদানিকারকেরা।

কক্সবাজার টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পেঁয়াজ আমদানি শুল্কমুক্ত হলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে।

তবে এ অভিযোগের কোনো সদুত্তর দেননি টেকনাফ বন্দরের মহাব্যবস্থাপক মো: জসিম উদ্দিন। মঙ্গলবার ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি ট্রলারে ৯৭০ টন পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।

কক্সবাজার টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দীন জানান, গত ১৫ আগস্ট থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ২২৬ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে; যা এখন প্রতিদিনই বাড়ছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

গত বুধবার টেকনাফ স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (বস্ত্রসেল) যুগ্ম সচিব তৌফিকুর রহমানের নেতৃত্বে স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের সাথে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘যেসব ব্যবসায়ী পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সঙ্কটে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার চিন্তা না করে পেঁয়াজের সঙ্কট নিরসনে এগিয়ে এলে সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

আমদানিকারক মোহাম্মদ হাশেম বলেন, মিয়ানমার আগের চেয়ে দাম বাড়িয়ে টন ৮০০ ডলার হাঁকাচ্ছেন। তবে এতে আমরা রাজি হইনি। কিন্তু গত বুধবার পর্যন্ত যেসব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছেছে, তা টনপ্রতি ৫০০ ডলার করে কেনা হয়েছে।’

পূর্ববর্তি সংবাদকাশ্মিরে নজরদারি আরও বাড়াতে ৫০ টি ড্রোন পাঠাচ্ছে ভারত
পরবর্তি সংবাদদুর্গাপূজা উপলক্ষে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আটদিন বন্ধ