চাকরি দেয়ার কথা বলে তরুণীকে ধর্ষণ করেন পল্টন থানার ওসি

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীকে ঢাকায় ডেকে হোটেলে রেখে ধর্ষণ করেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হক। অতঃপর তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসের পর মাস শারীরিক সম্পর্ক করেছেন ওসি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে না করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তরুণীর সঙ্গে। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে পুলিশের মহাপরিদর্শক পর্যন্ত।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, আমি সরকারি একটি কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যে ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ওসি মাহমুদুল হক আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমাকে ঢাকায় ডেকে আনেন। আমাকে রাখার জন্য পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলের একটি রুমে নিয়ে যান। সেখানে হোটেল বয়কে দিয়ে আমার জন্য স্যুপ আনান। আমি খেতে না চাইলেও জোর করে খাওয়ান। এরপরই আমি ঘুমিয়ে পড়ি।’

ওই তরুণী বলেন, ঘুম ভাঙলে দেখি রাত ২ টার মতো বাজে। ওই সময় মাহমুদুল হক আমার পাশেই শুয়ে ছিলেন। আমি বুঝতে পারি, ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হয়েছি। মাহমুদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আমাকে ভালোবাসেন। তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় জানিয়ে তিনি আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।

ওই তরুণী বলেন, মাহমুদুল হক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও আমাকে বিয়ে করেননি।

সবশেষ গত ২রা এপ্রিল আমার আমার পরিবার সবকিছু জানতে পারলে তারা মাহমুদুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এসময় আমার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়, পল্টন থানার ওসির অনেক ক্ষমতা, বাড়াবাড়ি করলে আমার অনেক ক্ষতি হবে। আমি ঢাকার বাইরে একটি চাকরি করছি। সেখানেও আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন মাহমুদুল হক।

ওই তরুণী বলেন, সবশেষে বাধ্য হয়ে আমি মতিঝিল জোনের এডিসি শিবলী নোমানকে বিষয়টি জানাই। তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে দেবেন বলেও জানান। মাহমুদুলের বাবাকেও বিষয়টি জানাই। তবুও কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত আমি আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগ করি। মাহমুদুল হক আমাকে বিয়ে না করলে আমি আদালতে মামলা করব।

পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে ওসি মাহমুদুলের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পান মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোনালিসা বেগম। তদন্ত শেষ করে তিনি প্রতিবেদন ডিএমপি সদর দফতরে পাঠিয়েও দিয়েছেন । সেখান থেকে গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনটি পুলিশ সদর দপ্তরেপাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিবেদনে মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। প্রতি মাসেই ওই হোটেলে ওসি পল্টনের নামে এক বা একাধিক দিন বুকিংয়ের তথ্য মিলেছে। তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ এ বছরের ১৭ই মার্চ ওই হোটেল থেকে চেকআউট করেন ওসি মাহমুদুল। এছাড়া কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেও ওসি ওই তরুণীকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে জানতে পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হক বলেন, আমি সূক্ষ্ণ ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।

পূর্ববর্তি সংবাদক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে আড্ডা, আটক ২৬ ছাত্র-ছাত্রী
পরবর্তি সংবাদকারফিউ উপেক্ষা করে আবারো রাজপথে কাশ্মিরি জনগণ