ইসলাম টাইমস ডেস্ক: আসামের নাগরিক নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়াদের জন্য সেখানকার গোয়ালপাড়ায় প্রস্তত করা হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্প। বিভিন্ন গণমধ্যমে প্রকাশিত নির্মাণাধীন ক্যাম্পগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ক্যাম্পের প্রাচীর এতটাই উঁচু যে বাইরে চোখ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া লাখ লাখ অসমীয় হয়ে যাবেন একেবারে ভিন্ন জগতের মানুষ।
গুয়াহাটি থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে মাটিয়া এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্প। সেখানে প্রথম প্রাচীরের উচ্চতা ২০ ফুটের মতো। আর ছয় ফুটের বেড় তো রয়েছেই।
সেখানে ১৫টি চারতলা বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে দুটি হবে নারীদের জন্য। থাকবেন তিন হাজার লোক।
একটি ঘরে চার থেকে পাঁচজন লোক থাকবেন। শিশুদের নিয়ে থাকা নারীদের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা।
গেল বছর থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডিটেনশন ক্যাম্প প্রস্তুত করতে খরচ হবে ৪৬ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ভারতের আসামের চূড়ান্ত নাগরিক(এনআরসি) তালিকায় ১৯ লাখ লোককে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে তারা মূলত অতি দরিদ্র এবং বেশিরভাগই মুসলমান। যদিও ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা, বাঙালি অনেক হিন্দুর নামও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সে ক্ষেত্রেও দেখা যাবে গরিব লোকজনই আসলে বাদ পড়েছে।
আইনি সাহায্য নিতে গড়ে প্রত্যেক ব্যক্তির খরচ পড়বে ৪০ হাজার ভারতীয় রুপির মতো। যদি ওই মামলা সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত যায়, তবে খরচ আরও বাড়বে।
দরিদ্র এ মানুষগুলো আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘোরার এবং মামলা লড়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে পাবে সেটাও বড় প্রশ্ন।
আসামের লেখিকা সঙ্গীতা বড়ুয়া পিশারতি বিবিসিকে বলেন, ‘যাদের নাম তালিকায় নেই তারা এরই মধ্যে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত। তার অন্যতম প্রধান কারণ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ।
তিনি বলেন, অনেকেই এটা নিয়ে অভিযোগ করছেন। ফলে তাদের ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে এটা ভেবেই অনেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।