কে বলতে পারবে, সড়কে আর কত প্রাণ যাবে?

আব্দুল্লাহ আল মামুন আশরাফী ।।

সড়ক জুড়ে মৃত্যুর মিছিল। কোনভাবেই যেন থামছে না। সড়ক দূর্ঘটনা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর অন্যতম। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দূর্ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। নিহত আহত লোকদের পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘশ্বাসে আকাশ-বাতাস ভারি হচ্ছে। প্রতিটি দুর্ঘটনাই কোন কোন পরিবারকে নি:স্ব করে দিচ্ছে। উপার্জনাক্ষম একমাত্র ব্যাক্তিটিকে হারিয়ে কোনো কোনো পরিবার তো পথে বসার যোগাড়। সব পরিবারের দীর্ঘশ্বাসের উপাখ্যান হয়তো মিডিয়ায় আসছে না। আড়ালেই থেকে যাচ্ছে অনেক পরিবারের দু:খগাথা। বেদনার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে ওরা প্রতিনিয়ত। অনিশ্চিত ওদের পথচলা।

প্রশ্ন হলো প্রতিটি দুর্ঘটনা কি আসলেই দুর্ঘটনা? এতে পরিবহন মালিক- চালক-হেলপারদের কি কোনও দায় নেই? মানছি কোন কোন ঘটনা পথচারীর অসাবধানতার পরিনাম। জীবন দিয়ে সে তার ভুলের মাশুল দেয়। কিন্তু এই যে ফুটপাতে নিশ্চিন্তে দাড়িয়ে থাকা কৃষ্ণা কিংবা ফারহা নাজ, তাদের কী অপরাধ ছিল? পত্রিকার ভাষ্য: রাজধানীর বাংলামোটরে ফুটপাতে বেপরোয়া বাসের চাপায় বিআইডাব্লিউটিসির কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় চৌধুরীর পা হারানোর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মহাখালীতে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন ফারহা নাজ নামের আরেক কর্মজীবী নারী। শিরোনাম: “ফের ফুটপাতে বাস, প্রাণ গেল কর্মজীবী নারীর” (কালের কন্ঠ:6/9/2019)।

পত্রিকায় ফারহা নাজের স্বামী ও সন্তানের ছবি ছাপা হয়েছে। মা হারা ফুটফুটে শিশটির ছবি দেখলেই চোখে পানি চলে আসে।বেদনায় হৃদয়টা হুঁ হুঁ করে কেঁদে ওঠে। এদিকে একই দিনে রাজধানীর তুরাগ বাসের চাপায় পারভেজ রব নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।(প্রাগুক্ত)

এরপর আরেকটি সংবাদ পড়ে রীতিমত স্তব্ধ হয়ে যাই। পত্রিকার ভাষ্যমতে “রবের পর ছেলেকে চাপা দিলো ভিক্টর পরিবহন, ছেলের পাঁজর ভেঙ্গে সংকটাপন্ন, বন্ধু নিহত সমঝোতা না করায় পরিকল্পিতভাবে চাপা দেয়ার অভিযোগ” (কালের কন্ঠ:9/9/19)। পুরো প্রতিবেদনটা পড়ে একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। ভাবি, কতটা নৃশংস হলে এমন বর্বর আচরণ করা যায়। মানবতার কতটা বিপর্যয় ঘটলে এমনটা হতে পারে। ওরা কি এতই অপ্রতিরোধ্য? ওরা কি আইনের উর্ধ্বে? ওরা কি প্রশাসনের চেয়েও শক্তিশালী? সবাই কি ওদের হাতে যিম্মি? প্রশ্ন জাগে। জানতে বড় ইচ্ছে করে, সড়কে আর কত প্রাণ যাবে?

পূর্ববর্তি সংবাদ‘আবেদন করলে রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে পারে আওয়ামী লীগ’
পরবর্তি সংবাদখালি জায়গা পেলেই কোনো পরিকল্পনা ছাড়া দালান তুলে ফেলা অসুস্থতা : প্রধানমন্ত্রী