৯/১১পরবর্তী সন্দেহভাজন ‘জঙ্গিতালিকা’, আমেরিকায় মুসলিম আইনজীবীদের ঐতিহাসিক বিজয়

এনাম হাসান জুনাইদ ।।

হাসান শিবলি বলেন, দিনটি তার জন্যে জীবনের  সবচেয়ে বড় খুশির দিন।

ফ্লোরিডা ভিত্তিক আমেরিকান মুসলিম আইনজীবী হাসান শিবলি  বিগত চৌদ্দ বছর ধরে আমেরিকার বর্ডার কর্তৃপক্ষের হাতে হয়রানিমূলক জিজ্ঞাসাবাদের শিকার হচ্ছিলেন। তার সাথে এমনভাবে আচরণ করা হত যেন তিনি আমেরিকার দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক।

“যখনই কোনো দেশ থেকে ফিরি তখনই আমাকে এ ধরণের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়,” বলেন হাসান শিবলি।Image may contain: 9 people, people smiling, people standing, crowd and outdoor

এখন তার এই ভয়ের মূল কারণ, আমেরিকার সরকারের সন্দেহভাজন জঙ্গিতালিকা আমেরিকার ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট বিচারক কর্তৃক অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়েছে ।

আমেরিকায় ইসলাম ও মুসলমানদের অধিকার সংরক্ষণকারী আইনজীবী সংস্থা ‘কেয়ার’ (the Council on American-Islamic Relations)  আমেরিকার এফবিআইয়ের জঙ্গী অনুসন্ধান সেন্টারের বিরুদ্ধে, যা কেয়ার সংস্থাটির পরিচালক হাসান শিবলীসহ আরও ২৩জন ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য ঘাঁটাঘাঁটি করে, ২০১৬ সালে মামলা করে।

মামলায় আইনজীবীরা বলেন, এই তদন্তকারী সংস্থাটি লিস্টভুক্ত লোকদের ব্যক্তি অধিকার লংঘন করছে এবং তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিচ্ছে না।

মুসলিম আমেরিকান আইনজীবীরা অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নাগরিক অধিকার লংঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছিলেন। কারণ ৯/১১ পর থেকে সরকার বাছবিছারহীনভাবে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের তালিকা করে জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা হরণ করছে।

আইনজীবীরা আরও অভিযোগ জানান যে, সরকার এ সকল ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য দেশের ব্যাংক, পুলিশ ইত্যাদি বিভিন্ন সেক্টরেও পাঠিয়েছে।

কেয়ার সংস্থার পরিচালক হাসান শিবলি বলেন, এখন আদালত আমেরিকার মুসলমানদের মুক্তি দিয়েছে। মুসলমানদের স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলার সুযোগ দিয়েছে।

শিবলি বলেন, যে জঙ্গী তালিকায় নাম থাকার কারণে আজ এত বছর ধরে বিমানবন্দরে, বর্ডার ক্রসিংয়ে আমাকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, নিপীড়নমূলক এবং আন-আমেরিকান।

“এটা একবারে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল যে, যখনই আমি ভ্রমণ করতে যেতাম, সেখান অস্ত্রধারী অফিসাররা উপস্থিত হয়ে যেত। তারা আমাকে আলাদা একটা কামরায় নিয়ে যেত। একবার আমার হাতে হাত কড়াও পরিয়েছে। আমাকে এমনভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যেন আমি একজন অপরাধী,” বলছিলেন হাসান শিবলি।

“সত্যি কথা কি, সে ঘটনাই আমাকে আইন নিয়ে পড়তে এবং সামাজিক অধিকার সংরক্ষণে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে” যোগ করেন শিবলি।

Image may contain: 3 people, people smiling, people standing, tree and outdoor

“কোথাও যেতে চাইলে যখন তারা আপনার সাথে একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মত আচরণ করবে তখন তো আপনার মনে হতেই পারে, আপনি একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। আপনার মনে হবে, আপনাকে টার্গেট করা হচ্ছে। এবং আপনার মনে হীনমন্যতা তৈরি হবে” বলেন হাসান শিবলি।

তবে মিডল ইস্ট আইয়ের পক্ষ থেকে  এফবিআইয়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সূত্র: মিডল ইস্ট আই

 

পূর্ববর্তি সংবাদঘুষ না পেয়ে ধর্ষণ : শর্শায় বদলি হলেন ওসি
পরবর্তি সংবাদতালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি বাতিল করলেন ট্রাম্প