আদালতের রায় অনুযায়ী জিয়া-এরশাদকে বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না: প্রধানমন্ত্রী

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: আদালতের রায় অনুযায়ী সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের শাসনামল অবৈধ। এ দুজনের কাউকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন  প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে আজ রোববার জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এরশাদের মৃত্যুতে আজ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে জাতীয় সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদের সদস্য এরশাদের মৃত্যুতে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। আজ থেকে শুরু হয় একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন। এ অধিবেশন চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

সমালোচনার পাশাপাশি এরশাদের ভালো কাজের প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জিয়া ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেননি। এরশাদ সেটি করেছিলেন। স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনারের কাজ এরশাদ শেষ করেছিলেন। ১৪ জন ছাত্রনেতার মৃত্যু পরোয়ানা ছিল, তাঁদের মুক্তি দিয়েছিলেন। ব্যক্তিজীবনে এরশাদ ছিলেন অমায়িক, মানুষের প্রতি তার দরদ ছিল।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এ কারণেই তিনি খালেদা জিয়াকে শুধু দুটি বাড়িই নয়, নগদ ১০ লাখ টাকাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন। যে কারণে জিয়া হত্যার ঘটনায় করা মামলা বিএনপি চালায়নি। বহু বছর পর ১৯৯১ সালে বা এর পরে খালেদা জিয়া জেনারেল এরশাদকে তার স্বামী হত্যার জন্য দায়ী করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিচারপতি সাত্তার। এরশাদ বলেছিলেন, সাত্তার তার প্রার্থী। রাজনীতিতে না এলেও সে সময় খালেদা জিয়া হঠাৎ করে বিবৃতি দেন সাত্তারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ থেকে বিদায় দেওয়ার জন্য।

জাতীয় পার্টির সাম্প্রতিক কাজের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে আসার পর গঠনমূলক সমালোচনা করেছে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। গত ১০ বছরে সংসদের ওপর, গণতন্ত্রের ওপর মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে। জাতীয় পার্টি সে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে এরশাদের জেল হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরশাদ ও রওশনকে বন্দী করে দিনের পর দিন অকথ্য নির্যাতন করা হয়। কারাগারের ভেতরও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে হেয় করা হয়েছে। বর্তমান সরকার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সে ধরনের অভদ্র আচরণ করছে না। যথেষ্ট উদারতা দেখাচ্ছে। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেও খালেদা জিয়াকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ তাঁর স্বামী এরশাদের ভুল–ত্রুটির জন্য সবার কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, এরশাদ কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পরও সেটা প্রমাণিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। সে সময় সব বিরোধী দল তাতে সমর্থন দিয়েছিল। আদালত এরশাদের প্রথম শাসনামলকে অবৈধ বলেছেন, তবে সে সময়ের কর্মকাণ্ড গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় শাসনামল নিয়ে আদালত নেতিবাচক কিছু বলেননি।
কাদের বলেন, এরশাদের কর্মকাণ্ডের সঠিক মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে, তিনি গণতন্ত্র রক্ষা ও বিকাশে কাজ করেছেন।

পূর্ববর্তি সংবাদ১০ মুহাররমের সাথে ৯ বা ১১ তারিখ মিলিয়ে আশুরায় ২ টি রোযা রাখা উত্তম
পরবর্তি সংবাদকিশোর গ্যাং’য়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপির নির্দেশ