আমার মন কাঁদে ইদলিব, মিয়ানমার, ইয়ামেন, কাশ্মীরের জন্য

আমেরা আব্দুল ফাতুহ ।।

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সাথে এগুলো কী হচ্ছে? এমন কোন নির্যাতন আছে, যা মুসলমানদের উপর চালানো হচ্ছে না?

রোহিঙ্গা মুসলিমরা এখনো তাদের দেশে নির্যাতিত হচেছ। তাদের বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। নারীদেরকে ধর্ষণ করা হযেছে। শিশুদেরকে হত্যা করা হযেছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতিগত নিধন সংঘটিত হয়েছে মিয়ানমারে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ পর্যন্ত অনেকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু তাদের কাজ হুঁশিয়ারী আর তথ্যসংসগ্রহ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। জাতিসংঘকে কি কখনো মুসলমান ও আরব ইস্যুতে ন্যায় বিচার করতে দেখা গেছে? এটা তো প্রতিষ্ঠাই হয়েছে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর লাভের জন্যে। পৃথিবীর অসহায় লোকদের জন্যে নয়। যদি তা না হত তাহলে এত দিনে ইসরাইলের নৃশংসতা বন্ধ করে  ফিলিস্তিনীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হত।

মিয়ানমারের ক্ষত না শুকাতেই জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের উপর দমনপীড়ন শুরু হয়েগেলে। হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণ আরও বেড়ে গেল যখন এই উইঘুর মুসলিমদের উদ্ধারের পরিবর্তে তাদের  রক্তের উপর দিয়ে কিছু আরব এবং কিছু মুসলিম দেশ চীন ও তার জিনজিয়াং নীতিকে সমর্থন জানিয়েছে। সৌদি, সিরিয়া, কুয়েত কাতার আমিরাত, বাহরাইন, ওমান, আলজেরিয়া, মিসর, ‍সুদান যাদের অন্যতম।

সত্য বলতে কি, মুসরমানদেরকে নির্যাতনের জন্য আমরা কেন শুধু পশ্চিমাদের নিন্দা করি, যারা মানবাধিকার রক্ষার দাবি করে অথচ আসল অন্যায় ও অপরাধ তো সে সকল মুসলিম নেতাদের, যারা পশ্চিমাদের আমাদের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করেছে। মুসলিম নেতারাই পশ্চিমাদেরকে মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালাতে উদ্বুদ্ধ করছে যে, দেখ আমরা কিভাবে আমাদের লোকদের উপর নির্যাতন করি।

জাতিসংঘের এক তথ্যমতে, বিগত ৩ মাসে সিরিয়ায় রাশিয়া কর্তৃক বোমা হামলায় শিশু-নারী-বৃদ্ধাসহ হাজার হাজার বেসামরিক  নাগরিক নিহত হয়েছেন।  চার লাখ সিরিয়ান নাগরিক দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন, যাদের আশ্রয়স্থল কেবলই সীমান্তবর্তী জলপাই গাছ।

সিরিয়ায় বেসামরিক জনতার মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আরব নেতাদের হাতে মুসলিম দেশগুলোতে যে পরিমান মানুষ নিহত হয়েছেন, আরব দেশগুলোতে মুসলমানদের উপর যে পরিমাণ হত্যা নির্যাতন চলেছে, তাতো ইসরাইল, বার্মা, ইন্ডিয়া, চীনায় সংঘটিত নির্যাতনের চেয়ে ভয়াবহ।

পৃথিবীর কোনো অভ্যুত্থানে হয়তো এত রক্ত ঝরেনি যত রক্ত ঝরেছে সিরিয়ায়। সিরিয়ার নাগারিকরা তাদের সম্মান আর স্বাধীনতার জন্যে সবকিছুই বিসর্জন দিচ্ছে। তাদের রক্ত ঝরেছে সবচেয়ে বেশী তাদেরই হাতে যারা তাদের ভাই। যাদের কাছে থেকে সহযোগিতা পাওয়ার আশা ছিল সবচেয়ে বেশী, তারাই তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে।

পশ্চিমা বিশ্ব তাদের সহযোগিতা কেনই বা করবে যখন তাদের রক্ত মাংসের লোকেরাই তাদের পরিত্যাগ করেছে। তাদের নিজদের সরকারই তাদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে।

প্রথম প্রথম আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো এমনভাব দেখাচ্ছিল যে, আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে। কিন্তু এখন পরিস্কার হয়ে গেছে, এটা ছিল একটা চাল। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো শুরু থেকেই এটা চেয়ে ছিল যে, আসাদ ক্ষমতায় থাকুক, যাতে ইসরাইলের রক্ষা হয় এবং গোলান মাল ভূমিতে ইসরাইলের দখল স্বীকৃতি লাভ করে। আমি এ বিষয়ে পুরাপুরি নিশ্চিত পশ্চিমাদের থেকে গ্রীন সিগন্যাল না পেয়ে রাশিয়া কখনো আসাদকে পতন থেকে রক্ষা করতে যায় না।

রক্ত ঝরছে কাশ্মীরে। রক্ত ঝরছে ইয়েমেনে।

হে আল্লাহ, তুমি মুসলমানদের রক্ষা কর। মুসলিম শাসকদের সুমতি দান কর।

সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর

অনুবাদ ও সংক্ষেপন: এনাম হাসান জুনাইদ

পূর্ববর্তি সংবাদঅবশেষে প্রত্যার্পন বিল প্রত্যাহার করল হংকং সরকার
পরবর্তি সংবাদশাহজালাল বিমানবন্দরে ভিআইপিদের জন্য পৃথক তল্লাশি গেট চালু