বঙ্গবন্ধু একটা মস্তবড় ভুল করেছিলেন: জেনারেল সফিউল্লাহ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: সাবেক সেনাপ্রধান, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ’৭১–এর সভাপতি কে এম সফিউল্লাহ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটা মস্ত বড় ভুল করেছিলেন, সেটা হচ্ছে আমাকে সেনাপ্রধান করে আর জিয়াউর রহমানকে উপপ্রধান করে।’ তিনি যোগ করেন, ‘সেনাবাহিনীর মধ্য থেকেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। আর আমি তখন ছিলাম সেনাপ্রধান ‘

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ এসব কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ’৭১।

কে এম সফিউল্লাহ মনে করেন, ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে তাকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়ে জিয়াউর রহমানকে উপপ্রধান করাটা ঠিক হয়নি। তিনি ওই সময়কার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘আমি কিন্তু সেনাপ্রধান হতে চাইনি। জেনারেল ওসমানী ৫ এপ্রিল ডেকে বললেন, “তুমি আর্মি টেক ওভার করো।” আমি বললাম, আমার সিনিয়র আছে। আমার তিনজন সিনিয়রের নাম বললাম। কর্নেল রব, দত্ত ও জিয়াউর রহমান। আমরা একই ব্যাচের হলেও জিয়াউর রহমান আমার চেয়ে ১ নম্বরের সিনিয়র ছিলেন। তখন আমি বললাম, এটা ঠিক হবে না। আমি বললাম, স্যার, এ সময়ে কি কাজটা করা ঠিক হবে? আমাদের মধ্যে তো একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হবে। অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত হোক আর যাহোক, এটা ঠিক হচ্ছে না।’

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, ‘আমি জানি, অনেকেই বলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় আমি সেনাপ্রধান ছিলাম। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। আমার সে সময় সামর্থ্য ছিল না। কী করতে পারতাম। ওই সময়ে কিছু করার মতো আমাদের পজিশন ছিল না।’

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. নুরুল আলম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহসভাপতি আনোয়ার উল আলম, যুগ্ম মহাসচিব আবদুল মাবুদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল হাই প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার জন্য যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলা হয়। সূক্ষ্মভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা কোনো ব্যক্তির হত্যা নয়। স্বাধীনতা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু—সমার্থক। এ জন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল।’

সংগঠনের মহাসচিব হারুন হাবীব বলেন, জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। অনেক ঘাতকের বিচার হয়েছে। কয়েকজন বিদেশে আছেন।’ তিনি যোগ করেন, শুধু বিচার করলেই হবে না। একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। এর পেছনের কুশীলব, ষড়যন্ত্রকারী যারা বেসামরিক, সামরিক এমনকি আওয়ামী লীগের যারা জড়িত ছিল, তাদের নাম ও পরিচয় নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।

পূর্ববর্তি সংবাদকাশ্মির ইস্যু: ট্রাম্প-মোদি বৈঠকের কয়েক ঘন্টা পরেই সৌদি যুবরাজকে ইমরান খানের ফোন
পরবর্তি সংবাদজেলা-উপজেলায় যেতে গরিমসি, ফের চিকিৎসকদের প্রতি ক্ষোভ প্রধানমন্ত্রীর