এনআরসি ইস্যু: আসামে তৈরি হচ্ছে বিশাল বন্দিশিবির, আতঙ্কে মুসলিমরা

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ভারতের বিজেপি সরকার কট্টর হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দেশটির মুসলিমরা। ভারতে কমপক্ষে ৪০ লাখ মানুষ বিদেশী অভিবাসী ঘোষিত হওয়ার ঝুঁকিতে। এর বেশির ভাগই মুসলিম। নাগরিকত্বের জনপ্রিয় যে ধারা তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে দেশটির বিজেপি সরকার এবং নতুন করে নাগরিকত্বের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে। এর ফলে আসাম রাজ্য সরকার ফরেনার ট্রাইব্যুনাল দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি করছে। পরিকল্পনা নিয়েছে নতুন নতুন বিশাল সব বন্দিশিবির নির্মাণের।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিক জেফ্রে জেটলম্যান ও হরি কুমারের লেখা প্রতিবেদনটির শিরোনাম-‘ইন্ডিয়া প্লানস বিগ ডিটেনশন ক্যাম্পস ফর মাইগ্রেন্টস অ্যান্ড মুসলিমস আর অ্যাফ্রেইড’।

এতে তারা আরো লিখেছেন, আসামে অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হতে যাচ্ছে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে পাহাড়ি এ রাজ্যে যেসব বিপুল সংখ্যক নাগরিকের নাগরিকত্ব এখন প্রশ্নের মুখে, তারা জন্মেছেন এই রাজ্যে। তারা এখানে নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে সব রকম নাগরিক সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু রাজ্য কর্তৃপক্ষ দ্রুততার (র‌্যাপিডলি) সঙ্গে ফরেনার ট্রাইবুনাল বৃদ্ধি করছে। একই সঙ্গে নতুন নতুন বিশাল আকারের বন্দিশিবির নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। শত শত মানুষকে বিদেশী অভিবাসী হিসেবে সন্দেহজনকভাবে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে পদস্থ বর্ষীয়ান এক মুসলিম যোদ্ধাও।

স্থানীয় অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, নাগরিকত্বের প্রাথমিক তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার বেদনায় এবং জেলে যাওয়ার আতঙ্কে এরই মধ্যে কয়েক ডজন মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসক দল পিছু হটছে না। উপরন্তু তারা ভারতের অন্যান্য অংশে নাগরিকদের নাগরিকত্ব প্রমাণের এমন ধারা চালু করার প্রত্যয় ঘোষণা করছে। মে মাসে লোকসভা নির্বাচনে নতুন করে নির্বাচিত হওয়ার আগে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জাতীয়বাতাদী কর্মসূচির অংশ এটা। তার সরকারের জনপ্রিয়তার কৌশল এটি। ওদিকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক দিন দিন বাড়ছেই। আসাম উদ্বেগের সঙ্গে নাগরিকত্ব পর্যবেক্ষণ করছে। এই ধারা শুরু হয়েছে এক বছর আগে। তা শেষ হওয়ার কথা ৩১ শে আগস্ট। এই ঘটনাটি মুসলিমদের পিছনে ঠেলে দেয়ার আরেকটি উদ্যোগের সঙ্গে মিলে গেছে, যা ঘটছে আসাম থেকে কমপক্ষে ১০০০ মাইল দূরে।

দু’সপ্তাহেরও কম সময় আগে ভারতের মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে ‘স্টেটহুড’ একতরফাভাবে কেড়ে নিয়েছে। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীর তার বিশেষ স্বায়ত্তশাসন হারিয়েছে। চলে গেছে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে। তবে স্থানীয় কোনো নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করা হয়নি। এসব নেতার অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পূর্ববর্তি সংবাদফিরে যেতে চাওয়া রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার শুরু কাল: দূর হচ্ছে না ভীতি
পরবর্তি সংবাদস্কুলে দুপুরের খাবার পাবে দরিদ্র অঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা