‘খাইতেই পারি না, কুরবানি কিভাবে দেব,

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। কিন্তু এই আনন্দটুকু উপভোগ করতে পারছে না লক্ষ্মীপুরের জেলেরা। তাদের ঈদ মানে আনন্দ নয়, এটি শুধু একটি নাম। কারণ গত তিন মাস নদীতে গেলেও একদিনও কাঙিক্ষত ইলিশ পায়নি তারা। অধিকাংশ দিনই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকার জেলে হাফিজুল্লাহ ও আবদুর রশিদ গণমাধ্যকে এ কথাগুলো বলেছেন।

তারা জানান, ফজরের আজানের পর তারা নদীতে ইলিশ শিকারে গিয়েছিলেন। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তারা ডাঙ্গায় ফিরে আসে। কিন্তু তাদের জালে মাত্র দুই থেকে তিন কেজি ইলিশ ধরা পড়েছে। যা বিক্রি করে তেল খরচ ও সহযোগীদেরকে দিয়ে সামান্য কিছু টাকা ভাগে পড়বে।

কোরবানির ব্যাপারে আবদুর রশিদ বলেন, খাইতেই পারি না। কোরবানি কিভাবে দেব। মাঝে মাঝে ছেলেমেয়েদের মুখে খাবার তুলে দেওয়াটাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বাকি দিনগুলোর মত, ঈদেও আমাদের একই রকম সময় কাটে। কোন তফাৎ নেই। নদীতে মাছ পাওয়া গেলে, অন্যদের মত আমাদেরও ঈদ আনন্দে কাটত।

হাফিজ উল্লাহ আরো জানান, গত এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিদিনই তিনি নদীতে গেছেন। ঈদ উপলক্ষে ছেলে-মেয়েদের মুখে একটু ভালো খাবার তুলে দেওয়ার আশায় প্রতিদিনই জাল ফেলেছেন। কিন্তু আশানুরুপ ইলিশ পাওয়া যায়নি। যা পাওয়া গেছে, তা বিক্রি করে তেল খরচ আর সহকারীদের দিয়ে কোন রকম চাল কিনছেন। তবে ঈদ উপলক্ষে ছেলে-মেয়েদের জন্য রুচি সম্মত খাবার কিনতে পারেনি। আর তার কাছে ঈদে সন্তানদের নতুন জামা দেওয়াটাও এখন স্বপ্নের মত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জেলা সদর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। গত মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ছিল। এরমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। বাকি জেলেরা এর থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নদীতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও গত তিন মাসে আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না জেলেদের জালে। এতে তারা সংসার খরচ, দাদনদার ও মহাজনদের দেনা শোধ করতে পারছে না। বরং আরো ধার নিতে হচ্ছে তাদের।

পূর্ববর্তি সংবাদকোরবানির বর্জ্য অপসারণে রাজধানীতে ১৪ হাজার কর্মী
পরবর্তি সংবাদকুরবানীর গরু : ছবি আপলোডে আপত্তি কোথায়