যেভাবে কুরবানির পশুর যত্ন নিবেন

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: কোরবানির আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি।  এরই মধ্যে পশুর বাজার জমে উঠেছে। অনেকে ঘুরে ঘুরে পছন্দ করছেন আবার কেউ কেউ কিনে ফেলেছেন। কোরবানির পশু আগে ভাগে কেনা ভালো। পশুর যত্ন ও পরিচর্যা নেয়া যায়। এর ফলে পশুর সঙ্গে কোরবানি দাতার একটা হৃদ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা ভালোবাসা ও মায়ার রূপ নেয়।

কোরবানির পশুর যত্ন ও পরিচর্যা  সম্পর্কে কারওয়ানবাজার জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়ার শিক্ষক শামসুদ্দীন সাদী বলেন, এটি একটি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

কেনার সময় থেকে জবাই করা পর্যন্ত নানা ধাপে পশুর যত্ন ও পরিচর্যা নিতে হবে। হাট থেকে পশু কেনার পর বাসা দূরে হলে পিকআপ ভ্যানে করে আনাই ভালো। সাধারণত হাটবাজারে ব্যবসায়ীরা পশুকে পর্যাপ্ত খাদ্য দেয় না। যার কারণে পশু এমনিতেই কিছুটা দুর্বল থাকে। আবার অনেক পশু হাঁটায় অভ্যস্ত থাকে না। এই অবস্থায় হাঁটিয়ে আনা হলে পশুর কষ্ট বেড়ে যায়। তাই পিকআপভ্যানে আনাই উত্তম।

ভুষি, খৈল, গাছের পাতা, ঘাস ও খড় আগে থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রস্তুত রাখতে হবে। এই সময়ে পশু ক্ষুধার্ত থাকে। হাঁটিয়ে আনলে পিপাসা ও ক্ষুধা আরও বৃদ্ধি পায়। তাই বাসায় আনার পরপর পশুকে খাদ্য ও পানীয় দিতে হবে।

পশুর গায়ে ময়লা থাকলে তাই বাসায় আনার পরে গোসল করানো উচিত। পশুর গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করা যায়। পশুর প্রতি মমত্ববোধ ইসলামের শিক্ষা। কোরবানির পশুর প্রতি আরও বেশি মমত্ববোধ থাকা জরুরি। এই পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা হবে। আল্লাহর সামনে নিজের প্রিয় জিনিস উৎসর্গ করাই উত্তম। কেননা আল্লাহ তায়ালা বান্দার অন্তরের অবস্থা দেখেন।

পশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে, শান্ত-শীতল পরিবেশে রাখতে হবে। স্যাঁতসেতে, অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা স্থানে না রাখা যাবে না। প্রতিদিন পশুর মলমূত্র ও উচ্ছিষ্ট খাবার পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা। পরিবেশ যেন দূষিত না হয়।

কোরবানির দিন ঈদের জামাতে যাবার আগে সকাল সকাল পশুকে গোসল করানো উচিত। যাতে গায়ে লেগে থাকা ময়লা-গোবর ইত্যাদি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

জবাই করার জন্য পশু শোয়ানোর সময় খুব বেশি ধস্তাধস্তি করা ঠিক নয়। কৌশলে যত্নের সঙ্গে শুইয়ে দেওয়া। শোয়ানোর পর দেরি না করে দ্রুত জবাই করা। পশু জবাই করার ক্ষেত্রেও বিশেষ যত্ন জরুরি। জবাই করার জন্য ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হবে। জবাইয়ের আগেই ছুরি ভালোভাবে ধারিয়ে নিতে হবে।

জবাইয়ের সময় যতটা সম্ভব পশুর প্রতি সহমর্মী থাকা ও সহজে জবাই করার চেষ্টা করা। এক পশুর সামনে অন্য পশুকে জবাই না করা। এতে জীবিত পশুর মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় সৃষ্টি হয়। পশু কষ্ট পায়।

জবাই করার সময় মাথাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা মাকরুহ। এতে পশুকে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দেওয়া হয়। জবাইয়ের পরপরই চামড়া খসানোর জন্য তাড়াহুড়া করা ঠিক হবে না। পশু নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া খসানো উচিত নয়।

সর্বোপরি কোরবানির পশুকে কোনো প্রকার কষ্ট না দেওয়া। পশুর প্রতি সদয় ও দয়াবান হয়ে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা এবং কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই কাজটা করছি তা মনে প্রাণে দৃঢ় রাখতে হবে।

পূর্ববর্তি সংবাদরাস্তার গাইড ওয়াল নির্মাণে কলাগাছ!
পরবর্তি সংবাদকাশ্মীরে গণগ্রেফতার, বন্দিদের নেয়া হচ্ছে অন্য রাজ্যে