ইসলাম টাইমস ডেস্ক: সুদানের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অবশেষে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে ‘সার্বভৌম পরিষদ’ গঠনে একমত হয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীরা। শুক্রবার (৫ জুলাই) এ খবর জানায় মধ্যস্থতাকারী আফ্রিকান ইউনিয়ন।
আফ্রিকান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী তিন বছর যৌথভাবে সরকার পরিচালনা করবে উভয়পক্ষ। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে, সংঘাতকারীদের বিচারের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিরোধীদের প্রতিনিধিরা। আর ঐক্যমতের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সামরিক পরিষদের।
ক্ষমতা ভাগাভাগি ইস্যুতে বুধ ও বৃহস্পতিবার ম্যারাথন বৈঠক করে সুদানের সামরিক পরিষদ ও বিরোধীরা। এতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ইথিওপিয়া। দীর্ঘ বৈঠকে যৌথ সরকার কাঠামো, আগামী নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন তারা। দু’দিনের বৈঠক শেষে আফ্রিকান ইউনিয়ন জানায়, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চক্রাকারে যৌথ সরকার পরিচালনায় একমত হয়েছে উভয়পক্ষ।
আফ্রিকান ইউনিয়নের বিশেষদূত মোহাম্মদ আল হাসান বলেন, তিন বছরের জন্য সার্বভৌম পরিষদ গঠনে একমত হয়েছে দু’পক্ষ। এসময়ে পালাক্রমে সরকার পরিচালনা করবেন তারা।প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অস্থায়ী একটি বেসামরিক সরকারও গঠন করা হবে। এছাড়া, গেলো কয়েক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার স্বচ্ছ, স্বাধীন এবং উপযুক্ত তদন্তেও একমত হয়েছে সবাই।
তদন্তে অভিযুক্ত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধীরা। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে নিয়ে ঐক্যমতের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে সামরিক পরিষদ।
বিরোধীদের প্রতিনিধি ওমের আল দিগাইর বলেন, নতুন চুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছ নেতৃত্ব গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অচলাবস্থা নিরসনে কাজ করবে। এ সরকার শান্তি ও স্বাধীনতার রক্ষায় কাজ করবে। যারা স্থিতিশীলতা রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করেছে; তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
সামরিক পরিষদের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো বলেন, নতুন চুক্তিতে সবার স্বার্থ রক্ষা হবে। কাউকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সুদানের জনগণের বিপ্লব রক্ষা এবং তাদের আশা পূরণই আমাদের সবার লক্ষ্য।
জনবিক্ষোভের মুখে সুদানের দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত কোরে সামরিক পরিষদ গঠন করে সেনাবাহিনী। বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু হলে আবারও বিক্ষোভে নামেন জনগণ। গণবিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় শতাধিক সুদানি। নতুন চুক্তিকে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা।