রমযান প্রতিবেদন: ‘কোরআন শিখে আমার নামায যেন প্রাণবন্ত হয়েছে’

 তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব।।

রমযান কোরআন নাযিলের মাস। এই কোরআন নাযিলের বিষয়টি রমযানের গুরুত্ব ও মর্যাদার অন্যতম প্রধান কারণ। সেজন্য অন্যান্য ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে কোরআন মাজীদের তেলাওয়াত রমযানের মৌলিক একটি ইবাদত। কোরআন তেলাওয়াত করা, বরং বিশুদ্ধভাবে কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত শেখা ও তেলাওয়াত করতে পারা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ।

রমযান মাসে সর্বস্তরের মুসলমানগণ সাধারণত এই ইবাদতের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেন। কোন কোন পরিবারে বেশি পরিমাণে তেলাওয়াত ও বেশি সংখ্যক খতম করার প্রতিযোগিতায়ও হয়। এটা খুবই আনন্দের এবং খুবই সুন্দর একটি উদ্যোগ।

এবারের রমযানের আগে একটানা অনেকদিন মেহনত করে বিশুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত শিখেছেন এমন দুজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কুরআন শিখার পর তাদের অনুভূতি।

কাকরাইলে অবস্থিত একটি অডিট ফার্মের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জনাব নাঈম চৌধুরী বলেন, এবারের রমযানে কেমন যেন অন্যরকম আনন্দ অনুভব করছি। বিশেষ করে তারাবীর নামাযে যখন তেলাওয়াত শুনি তখনকার অনুভূতি বর্ণনার অতীত। মনে হয় যেন ইমাম সাহেবের তেলাওয়াত আমি বুঝতে পারছি। বিভিন্ন হরফের উচ্চারণ, মদ, গুন্নাহ এখন তো পরিচিত। তাই যখন ইমাম সাহেব চার আলিফ টেনে পড়েন, আমার ভালো লাগে। আমি বুঝতে পারি। আাগে এসব বুঝতাম  না। আইন, সীন, শীন উচ্চারণ করলে আনন্দ লাগে। মনে হয়, আমিও তো এখন এই হরফগুলো উচ্চারণ করতে পারি। তাছাড়া যখন নিজে নামায পড়ি কিংবা নামাযের বাইরে কোরআন তেলাওয়াত করি তখনও খুব ভালো লাগে। অনেক আনন্দ লাগে। মোটকথা, এবারের রমযান আমার অতীত রমযানের চেয়ে অনেক ভিন্ন। অনেক সুখের। অনেক আনন্দের।

একই অফিসের আরেক কর্মকর্তা জনাব আবু সালেহ মুহাম্মদ মুহী বলেন, এখন আমার নামাযে যেন কিছুটা প্রাণ এসেছে। আগের নামায ছিল কেমন নিষ্প্রাণ! অনেকটাই নিয়ম পালন। এখন নামাযে মজা পাই। রুকু সিজদার তাসবীহ পড়তে ভালো লাগে। তাকবীর বলতে ভালো লাগে। বিশুদ্ধভাবে তাসবীহগুলো উচ্চারণ করার আনন্দ সত্যিই অন্যরকম। তাছাড়া নামাযে মনোযোগও এখন বেড়েছে। আর ফরয নামাযের জামাতে, তারাবীর নামাযে ইমাম সাহেব যখন সূরা তেলাওয়াত করেন তখনকার অনুভূতি আর কী বলব! অন্যরকম আনন্দ। অন্যরকম ভালো লাগা। এখন মাঝেমধ্যে ভাবি, যারা কোরআনের অর্থ বুঝেন, না জানি তারা নামাযে কত মজা পান!

দুজনই ঢাকার কাকরাইলে অবস্থিত একটি অডিট ফার্মের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। অফিস কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য সারা বছর অফিস সময়ের মধ্যেই কোরআন ও জরুরী দীন শেখার ব্যবস্থা রেখেছে। এতে সবশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বিপুলভাবে উপকৃত হচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ এবং অনুসরণীয় একটি কর্মপন্থা। আল্লাহ তা’আলা অফিস কর্তৃপক্ষ ও সকল কর্মকর্তাদেরকে সঠিক ভাবে দীন শিখে দীন অনুযায়ী জীবন যাপনের তৌফিক দান করুন। সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস কর্তৃপক্ষকে এ জাতীয় সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

 

 

পূর্ববর্তি সংবাদপরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ফের উত্তেজনা
পরবর্তি সংবাদ‘হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেলেই খালেদা জিয়াকে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হবে’