আবরার আবদুল্লাহ ।।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনা, স্থান, স্থাপনা ও উদ্ভিদের আলোকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গড়ে তোলা হয়েছে কুরআনিক পার্ক। এই পার্কে আল কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন দৃশ্যের চিত্রায়ণ করার চেষ্টা হয়েছে।
দুবাই প্রদেশের আল-খাওয়ানিজ অঞ্চলে ৬৪ হেক্টর জমির ওপর গড়ে তোলা এই পার্কটি মূলত ঐতিহাসিক বিবরণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২০০ মিলিয়ন দিরহাম।
এতে রয়েছে মূল প্রবেশদ্বার, প্রশাসনিক ভবন, কুরআনে বর্ণিত ১২টি বাগান, শিশুদের খেলার স্থান, দর্শনীয় স্থান, উন্মুক্ত আঙ্গিনা এবং কুরআনের অলৌকিক ঘটনার বর্ণনাসমৃদ্ধ এলাকা। আরও রয়েছে মরুদ্যান, পাম বাগান, নয়নাভিরাম লেক, চলমান রাস্তা এবং সাইক্লিনিং ট্র্যাক ও হাঁটার রাস্তা।
কুরআনে বর্ণিত উদ্ভিদসমূহের মধ্যে দারুচিনি, জলপাই, মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, গম, আদা, কুমড়া, তরমুজ, তেঁতুল, আঙ্গুর, কলা, ডুমুর, ডাল, ভুট্টা, বার্লি, শসা, আম, কাছিড়, তুঁত এবং বিভিন্ন মসলার উদ্ভিদ দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে এ কুরআনিক পার্ক। কুরআনিক গার্ডেনে এমন কিছু উদ্ভিদের বাগান রয়েছে, যা দ্বারা ভেষজ চিকিৎসা করা যায়।
এছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণ দৃষ্টিনন্দন ঝরনা। গ্লাস নির্মিত স্বচ্ছ ভবন। আসহাবে কাহাফের বর্ণনার সঙ্গে মিলিয়ে একটি গুহাও তৈরি করা হয়েছে। মৃত সাগরের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে একটি জলাধার ও হজরত মুসা আ.-এর ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করার জন্য জলাধারের মাঝ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি পথ।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ৫৪ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ৩৫টি পার্কের অভ্যন্তরে প্রদর্শিত হচ্ছে। অবশিষ্ট ১৫টি গ্রিন হাউজে প্রদর্শিত হবে এবং আরো ২০টি প্রজাতি পার্কের বাইরে প্রদর্শিত হবে। পার্কে একটি ট্যানেল আছে, যা অলৌকিক ঘটনার অডিওসহ চিত্র তুরে ধরতে ব্যবহার হচ্ছে।
কোন টিকেট ছাড়াই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। এই পার্ক সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, এই পার্ক সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
আগত দর্শনার্থীর সুবিধার্থে প্রতিটি নির্মাণের পাশে লিখে দেওয়া হয়েছে কুরআনের বর্ণিত ঘটনার প্রসঙ্গিক আয়াত। এছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া রয়েছে, যেখানে ঘটনার আলোকে প্রাসঙ্গিক ভিডিও দেখানো হচ্ছে। এই পার্ক মুসলমানদের আগ্রহী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া মুসলমানের অর্জনগুলো অন্য ধর্মের মানুষকে আগ্রহী করছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ।