আবরার আবদুল্লাহ ।।
গত শনিবার তুরস্কে ইস্তাম্বুলে নবনির্মিত পৃথিবীর বৃহত্তম বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। ইস্তাম্বুলের পুরাতন ‘আতাতুর্ক’ বিমানবন্দরের পরিবর্তে ‘ইস্তাবম্বুল বিমানবন্দর’-এর যাত্রা শুরু হলো। এখন থেকে কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে আর কোনো আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্যিক কোনো ফ্লাইট উঠা-নামা করবে না। সেটাকে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
তবে বিশ্লেষকদের দাবি, আতাতুর্ক বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থানান্তর হলেও তার নামটি সচেতনভাবে পরিত্যাগ করেছে এরদোয়ানের ইসলামপন্থী সরকার। তুরস্কের ইসলামপন্থীরা খেলাফত ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্ক গঠনের জন্য কামাল আতাতুর্ককে দায়ী মনে করেন। কামাল আতাতুর্ক তুরস্কে খেলাফত ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেওয়ার পর সেখানে আজান, কুরআন তেলাওয়াত, ইসলামি পোশাক ও ইসলামি শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
শনিবার মধ্যরাত থেকে নতুন এই বিমানবন্দরের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম দিনেই ৭৯টি ফ্লাইটে ২৫ হাজার যাত্রী বহন করে তুর্কি এয়ারলাইনস। রাত ২ টায় প্রথম সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে প্রথম ফ্লাইট উড্ডয়ন করে।
তবে গত বছরের অক্টোবরের অফিসিয়াল উদ্বোধনের পর বেশ কিছু পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করা হয় এই বিমানবন্দর থেকে।
সাবেক আতাতুর্ক বিমানবন্দরটি ১৯৫৩ সালে নির্মিত হয় এবং গত বছর তা ব্যবহার করেন ৬৪ মিলিয়ন মানুষ। যা সামনে আরও বাড়বে বলে ধারণা। তাই আরও সুন্দর ব্যবস্থাপনা ও সুবিধাসহ নতুন এই বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হলো।
আতাতুর্ক বিমানবন্দর থেকে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে সব নথিপত্র ও সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানান্তরিত কাগজপত্রের ওজন ৪৪ টন এবং তা স্থানান্তরে ৫০০ ট্রাক ব্যবহার করা হয়।
ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এই বিমানবন্দরের কাজ শেষ হলে তার আয়তন হবে ৭৬.৫ মিলিয়ন স্কয়ারমিটার এবং এটাই হবে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর। বিমানবন্দরের বর্তমান ধারণ ক্ষমতা ৯০ মিলিয়ন যাত্রী। আর ২০২৩ সালে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে ২০০ মিলিয়ন যাত্রী তা ব্যবহারের সুযোগ পাবে। তুর্কি এয়ারলাইনস তখন বিশ্বব্যাপী ৩৫০টি ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।
১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত তুর্কি এয়ারলাইনস বর্তমানে ৩০০ ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর মধ্যে ৪৯টি স্থানীয় ও ২৫৭টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট (১২০ দেশে) পরিচালনা করে। বছরে ৭৫ মিলিয়ন যাত্রী তুর্কি এয়ারলাইনস ব্যবহার করে।
ফ্লাইট পরিচালনা শনিবার রাতে শুরু হলেও বিমানবন্দরের অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু হয় ২৯ অক্টোবর ২০১৮ সালে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার উদ্বোধন করেন।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ